নির্বাচনের নামে এই সরকারের কোনো প্রহসনে বিএনপি যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার আয়োজনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ফুঁসছে। তারা পরিবর্তনের একটা সুযোগ চায়। অনেকে আমার কাছে প্রশ্ন করেন আপনারা নির্বাচনে যাবেন নাকি? আমরা যদি নির্বাচনে নাই-ই যেতে চাই তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন কেন চাচ্ছি? নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন কেন চাচ্ছি? নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েনই বা কেন চাচ্ছি? নির্বাচনে যাব বলেই তো এসব চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। তবে এই সরকারের অধীনে নির্বাচনের নামে সিটি করপোরেশনের মতো কোনো প্রহসনে যেতে চাই না। কারণ নির্বাচনে যদি মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ না পায় তাহলে জনগণ যে পরিবর্তন চান সেটা তারা করতে পারবেন না।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে যাব। তার আগে ইনশাআল্লাহ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। তাকে নিয়েই নির্বাচনে যাব। কিন্তু তাঁর মুক্তির জন্য আমাদের সবাইকে রাজপথে কঠোর আন্দোলন করতে হবে।’
নজরুল বলেন, ‘শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি হলো, তার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ না করে অর্থমন্ত্রী বললেন- এটা প্রকাশ করা যাবে না, কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোকের নাম আছে। এরপর আমার ব্যাপারে বলা হলো সিঙ্গাপুরে নাকি আমার একটি বিলাশবহুল অ্যাপার্টমেন্ট আছে। আমি বললাম থাকতেও পারে। তবে যিনি বলেছেন তিনি ওই অ্যাপার্টমেন্টের ঠিকানা আনুক। আমি তাকে মাত্র ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে দলিল করে দেব। আমি অনেক সমস্যায় আছি। টাকার দরকার। আমাদের দলের নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নামে বলা হল। তিনি এক মাসে ২০ কোটির ওপরে লেন-দেন করেছেন ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি (মোশাররফ) বললেন- আমি, আমার ছেলে, মেয়ে বা পরিবারের কোনো সদস্যের ডাচ বাংলা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট নেই। আগেও কখনো ছিল না। এরপর এসব নিয়ে আর কোনো কথা বলেন না।’
তিনি বলেন, ‘এসব কথার অভিযোগের সূত্র কি? গোয়েন্দা বাহিনীর তথ্য। গোয়েন্দা বাহিনী মানে ইন্টেলিজেন্স বাহিনী। কিন্তু এরা কেমন ইন্টেলিজেন্স। এরা হল সরকারি দালাল। সরকার কিছু দালালকে দিয়ে এসব বলার জন্য দোকান খুলছে। তারা বসে বসে এসব উদ্ভট তথ্য বানায়। কিন্তু এসব করে পার পাওয়া যায় না। আইয়ুব খানকে উন্নয়নের উৎসব পালন করতে দেখেছি। আবার কয়দিন পরে গর্তে পড়তেও দেখেছি।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আমরা এক দুঃসময় অতিক্রম করছি। কারণ দেশ পরিচালনা করছে লাইসেন্সবিহীন সরকার। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, সেই সরকারের লাইসেন্স আছে আমরা বলতে পারি না?’
এসময় তিনি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বিভিন্ন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘ইনু সাহেব জিয়া পরিবারের সমালোচনা করতে বেশি পছন্দ করেন। ইনুকে তাহলে সরকার বানাতে পারেন ‘জিয়া পরিবারের সমালোচনা বিষয়ক মন্ত্রী’। তিনি (তথ্যমন্ত্রী) বলেছেন- বিএনপি জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। মন্ত্রীদের এ কেমন অগণতান্ত্রিক ও সন্ত্রাসী ভাষা। গতকাল ভিসি কীভাবে একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারেন? এ ধরনের লোকদেরকে নিয়োগদান করছে লাইসেন্সবিহীন সরকার।’
জাগপা’র সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ এর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ।