বিএনপি নেতারা কে কোথায় ঈদ করছেন
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিগত বছরগুলোর মতোই লন্ডনে। মামলা, জেল , গ্রেফতার-হুলিয়ায় জর্জরিত দলটির নেতারা খুব একটা স্বস্তিতে ঈদ করতে পারছেন না। নিরানন্দেই কাটছে টানা ১২ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি নেতাদের ঈদ। এমন পরিস্থিতিতে থাকছে না দলের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজনও।
কিন্তু তারপরও থেমে থাকবে না বিএনপি নেতাদের ঈদ। নির্বাচনের বছর ঈদুল আজহাকে প্রচার-প্রচারণার সুযোগ হিসেবেও নিচ্ছেন অনেকেই । দলের বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা নিজ নিজ এলাকায় কোরবানি করতে যাবেন। কেউ বা গ্রামে কোরবানি করে ঢাকায় ফিরবেন। কেউ আবার ঢাকায় কোরবানি করে গ্রামে যাবেন।
সকাল সাড়ে ১১টায় পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে রাজধানীর শের ই বাংলা নগরস্থ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া ও মোনাজাত করবেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও দলের সিনিয়র নেতারা। পরে কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবেন নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঈদ করবেন ঢাকায়। ঠাকুরগাঁও ঈদ করার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তে তিনি ঢাকাতেই ঈদ করছেন, পলিটিক্সনিউজকে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারি কৃষিবিদ ইউনুস আলী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঈদ করবেন ঢাকায়। স্থায়ী কমিটির আরেক প্রবীণ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ঈদ করবেন নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে। স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রবীণ রাজনীতিক তরিকুল ইসলাম ঈদ করবেন নির্বাচনী এলাকা যশোরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ঈদ করবেন ঢাকায়, ড. মঈন খান ঈদ করবেন নির্বাচনী এলাকা নরসিংদীর পলাশে, নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস ঈদ করবেন ঢাকায়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় একটি মামলা হওয়ার পর থেকে অনেকটা আত্মগোপনে। বরাবরই তিনি চট্টগ্রামে ঈদ করে থাকেন। নির্বাচনের বছরে কোরবানীর ঈদ নিজ এলাকাতেই করতে চান বিএনপির এই নীতিনির্ধারক, জানিয়েছেন তার নিকটজনেরা।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ যথারীতি ঈদ করবেন ভারতে। অনুপ্রবেশের দায়ে ২০১৫ সাল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে আছেন তিনি। গত ৩ বছরে ৬টি ঈদ সেখানেই করতে হয়েছে তাকে। এবারও সেখানেই ঈদ করতে হবে তাকে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম , ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দীন আহমেদ ঈদ করবেন ঢাকায়। ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ঈদ করবেন নোয়াখালীতে। ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু চুয়াডাঙ্গায় ঈদ করবেন।
ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা গত কয়েক বছর যাবত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে আছেন। সেখানেই তিনি ঈদ করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, রিয়াজ রহমান, আব্দুস সালাম থাকছেন ঢাকায়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাদা মিয়া ঢাকায় ঈদ করবেন। আরেক উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক ঈদ করবেন নোয়াখালীর সেনবাগে।
নয়াপল্টন কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ঈদ নিজ দফতরেই হচ্ছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ঈদ করবেন নোয়াখালীতে, আরেক যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন নরসিংদীতে ঈদ করবেন। যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বরিশালে ঈদ করবেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ঈদ করবেন ঢাকায়।
বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব ঈদ করবেন ঢাকায় আর সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে ঈদ করতে হবে কারাগারে।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ঈদ করবেন ঢাকায়।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল ঢাকায় ঈদ শেষে নিজ এলাকায় যাবেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ঈদ করবেন ঢাকায়।