ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়: প্রধানমন্ত্রী

ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করাই মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৯ আগস্ট) সকালে গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট এবং ৮ জেলার ২০ উপজেলায় কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

৭৫ এর দুঃসহ সময়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার ৯ মাসের মাথায় একটি সংবিধান জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বেশিদিন সময় পেলেন না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখলাম প্রতিটি ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে। যা ভাবলে সত্যিই অবাক লাগে। তিনি প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। আমি যখন দেশে আসি তখন বঙ্গবন্ধুর খুনিরা ছিলেন পুরস্কৃত। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই বিচার বন্ধ করে যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার দেওয়া হয়েছে। তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে আমি দেশে আসি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভোট দেওয়া না দেওয়া জনগণের অধিকার। কিন্তু জনগণের সেবা করেই যাব। জনগণকে উন্নত জীবন দেব, খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এটা আমাদের অঙ্গীকার। আর এই অঙ্গীকার আমাদের পূরণ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ক্ষমতা আমার কাছে কোনো ভোগের বস্তু না, ক্ষমতা হচ্ছে দায়িত্ব পালন। কাজেই সেই দায়িত্বটাই পালন করতে চাই। আমি সব সময় মনে রাখি যে আমার বাবা দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছে, তাই জনগণের সেবা করাটা আমার প্রথম কর্তব্য।’

কিন্তু কী অদ্ভুত চরিত্র আমাদের এ দেশের মানুষের। কারণ আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করি কিন্তু পরে বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

জনগণের সেবা করার জন্যই ক্ষমতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও আইক্যাম্প করে চিকিৎসা দেয়া হবে। দরিদ্ররা যাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা নিতে পারে তারও ব্যবস্থা করা হবে।’

পাশাপাশি অঞ্চলভিত্তিক চিকিৎসা সেবা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে সরকার বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি শুধু হাসপাতাল করে ছেড়ে দেওয়া নয়, বিশেষজ্ঞ তৈরি করে তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে মেডিক্যাল কলেজ করে দিয়েছি। দেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দিয়েছিলাম। দুটো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এরইমধ্যে করা হয়েছে। আরও একটা করার পরিকল্পনা আছে।’

পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ডিভিশনাল হেডকোয়ার্টারে একটা করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়া হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/একে