কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, ‘খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ অবস্থায় কারা অভ্যন্তরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে তিনি কারাগারের ভেতর যেকোনও দুর্ঘটনার সম্মুখিন হতে পারেন।’
বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপনের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নাটক-সিনেমার মতো কক্ষে বিচার কাজ চলছে এমন অভিযোগ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘সেখানে পাবলিক তো দূরের কথা খালেদা জিয়া ও অন্যান্য আসামিদের নিয়োজিত আইনজীবী কিংবা আত্মীয়-স্বজন প্রবেশ এবং আদালতের কার্যক্রম দেখা বা শোনার কোনো সুযোগ নাই। নাটক সিনেমায় যে রকম দেখানো হয় সেই আকৃতির একটি আদালত কক্ষ বসানো হয়েছে। যেটা একটি গুহার মতো স্যাঁতস্যাঁতে। সেখানে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার সুযোগও নেই।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার একটি হাত ও একটি পা কোনও কাজ করে না এবং প্রায় অবশ অবস্থায় তিনি দিন পার করছেন। তিনি আথরাইটিস রোগে আক্রান্ত। কিছুদিন আগে তিনি জেলখানায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ইউনাইটেড হসপিটালে তার চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার দাবি জানালেও তাকে কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।’
আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন থেকে খালেদা জিয়াকে দূরে রাখার অপকৌশল হিসেবে বর্তমান অবৈধ ও অগণত্রান্ত্রিক সরকার তার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাসহ প্রায় ৩৬টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এছাড়াও একটি মিথ্যা মামলায় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করে খালেদা জিয়াকে ঢাকা পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারের ভেতরে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে বেআইনিভাবে সাজা দেয়ার লক্ষ্যে বেআইনিভাবে একটি অস্থায়ী আদালত গঠন করা হয়েছে। যাতে সাধারণ জনগণ বিচারের নামে সরকারের বেআইনি কার্যক্রম দেখতে বা বুঝতে সক্ষম না হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও গোলাম রহমান ভূঁইয়া, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ্ মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল প্রমুখ।