সরকারি দলের তিন সংসদ সদস্যসহ সাংগঠনিক কয়েকটি জেলার মোট ১৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।
সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে কুরিয়ার যোগে। দলের একাধিক সূত্র আরটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তিন সংসদ সদস্য ও দুই কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, শোকজের নোটিশ এখনও তাদের হাতে পৌঁছেনি।
সূত্রগুলো জানায়, তিন সংসদ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন দিনাজপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, রাজশাহী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও বরগুনা থেকে নির্বাচিত ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
তিন সংসদ সদস্যের নোটিশে বলা হয়েছ, দলীয় ঐক্য, সংহতি, সম্প্রীতি, আনুগত্য ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আপনার দায়িত্ব কর্তব্য যথাযথ ছিল কি না এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য প্রধান করে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রেরণের জন্যে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
শোকজ নোটিশে জানানো হয়েছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অপরদিকে দুই কেন্দ্রীয় নেতার দুজনই সিলেটের। তারা হলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন কামরান। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। সিটি নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকায় অভিযুক্ত করে মিসবাহউদ্দিন সিরাজকে এবং ওই নির্বাচন সাতটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী দিতে না পারার ব্যর্থতা, সিলেট মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে না পারা ও সিলেট মহানগরে আওয়ামী লীগের কার্যালয় নেই কেন জানতে চেয়ে কামরানকে শোকজ করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, দলীয় তিন সংসদ সদস্যকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার অপরাধে ও সদ্য সমাপ্ত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দিনাজপুর, বরগুনা ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকে শোকজ করা হয়েছে।
তারা হলেন- বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু, সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দীন, রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক মামুন, দিনাজপুর জেলা আইন সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বীরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি জাকারিয়া জাকা, সিলেট মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন।
দলীয় গঠনতন্ত্রের ধারা ৪৭ (ঠ) ও ৪৭(চ) মোতাবেক সাংগঠনিক জেলার নেতাদের শোকজ করা হয়েছে।
এই শোকজের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমাকে কোনও শোকজ করা হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনও চিঠি পাইনি। যতদূর শুনেছি, জেলা আওয়ামী লীগের যেসব নেতা এমপিদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাদেরকেই শোকজ করা হয়েছে। কোনও এমপিকেই শোকজ করা হয়নি।
দিনাজপুরের এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপালও আরটিভি অনলাইনের কাছে দাবি চিঠি পাবার কথা অস্বীকার করেছেন। তাকে যারা অবাঞ্ছিত করেছে তাদের শোকজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি।