জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া’ ও ‘যুক্তফ্রন্ট’ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগত ভাবে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এর আগে তারা নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করে শক্তিশালী, নির্বাচনের আগে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সারা দেশে সেনা সদস্য মোতায়েন, কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে আটকদের মুক্তি ও তাদের নামে মামলা প্রত্যাহারসহ রাজনৈতিক মামলায় আটকদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাবেন।
আগামীকাল শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এই দুই নেতা এই এসব দাবি জানিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে তাদের অঙ্গীকার বা ভবিষ্যৎ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তুলে ধরবেন। ‘জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া’র দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানায়, একটি নিরপেক্ষ সরকার ও প্রশাসনের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করতে সরকারকে বাধ্য করতে আন্দালন কর্মসূচি নিয়ে তারা রাজপথে নামবে চলতি মাসের মধ্যেই। তবে তার আগে তারা জাতীয় ঐক্যের পরিধি আরো বৃদ্ধি করে শক্তিশালী করবে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে এবং আজ শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পৃথক বৈঠক করে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যের নেতারা বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বা জাতির কাছে অঙ্গীকার করার বিষয়গুলো নির্ধারণ করে।
সূত্রটি জানায়, সরকারের কাছে তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া, টেলিভিশন-রেডিও ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা-সমাবেশ নির্বিঘ্নে করতে দেয়া, কোটা সংস্কার ও সড়ক আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, আটক ব্যক্তিদের মুক্তি, নির্বাচনের আগে ও পরে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়ন, আইনশৃঙ্খলা সংস্থাসহ সিভিল প্রশাসনকে নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যাস্ত করা, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহনের সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
এছাড়া জাতির কাছে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে- এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার অবসান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি, দুর্নীতি বিষয়ে জিরো টরালেন্স, পূর্বে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা, জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে সংস্কার করে শক্তিশালী করা।
ড. কামাল হোসেন ও সাবেক রাষ্টপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এসব ঘোষণা দেবেন বলে সূত্রটি আভাস দেয়।
যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার একাধিক নেতার সঙ্গে আলোচনা করে আরো জানা গেছে, তাদের এই কর্মসূচির সপ্তাখানেক পর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে সূত্রটির ধারণা জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার মহাসমাবেশ থেকে গঠনমূলক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা উত্তরায় আ স ম আব্দুর রবের বাসায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে ড. কামাল হোসেন ও বি চৌধুরী এসব বিষয় নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন।
উত্তরার ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিকল্প ধারার সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ স ম রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুলতান মনসুর আহমেদসহ অন্যরা।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৪টায় ড. কামাল হোসেন বি. চৌধুরীসহ জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদও রহমান মান্না দেশ ও জাতির কাছে তাদের ভবিষ্যৎ অঙ্গীকার তুলে ধরবেন ।’