আইন ও সংবিধানের প্রতি বিএনপির অনাস্থার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আইনের প্রতি বিএনপির অনাস্থা চির জীবন ছিল। তারা আইন মানে না, সংবিধান মানে না। কোনও নিয়ম মানে না। তারা তো ‘মানি না মানবো না’ পার্টি । বিএনপির আরেক নাম হচ্ছে ‘মানি না মানবো না’। এছাড়া ‘নালিশ পার্টি’ হিসেবে তো তাদের সুপরিচিতি আছেই।’
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী হলে নিজের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রের শুভ মহরত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
‘এক মাসের মধ্যে দেশের অনেক কিছু পরিবর্তন হবে’- বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদের এমন বক্তৃতার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি মিডিয়াতে দেখেছি, তারা একমাসের মধ্যে বাংলাদেশ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে। দশ বছর ধরেই তো তারা এই চেষ্টা চালাচ্ছে। জনগণ বিএনপির কোনও আন্দোলনে সাড়া দেয়নি। দশ বছরে যেটা পারেননি আগামী একমাসে তা পারবে- সেটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। এটা একটা হাস্যকর বিষয়।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপি এখন দিবাস্বপ্ন দেখতেই পারে। বেশি দেরি নেই এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হওয়ার। কারণ তাদের স্বপ্নের সাথে জনগণের কোনও সংযোগ নেই। জনগণ যদি সাড়া না দেয় তাহলে তারা আন্দোলন করবে কাকে নিয়ে?’
জাতিসংঘে বিএনপির সফর প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিদেশিদের কাছে কান্নাকাটির পর্ব শেষ করে সর্বশেষে জাতিসংঘে গিয়েও নালিশ করলো বিএনপি। জাতিসংঘে কান্নাকাটি করে বাংলাদেশকে ছোট করলো, অসম্মান করলো। বিএনপি দেশের জনগণ ও গণতন্ত্রকে অপমান করলো।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ তো বিএনপিকে আমন্ত্রণ করেনি। তারা নিজেরাই ত্রিশ হাজার ডলার দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে এ আলোচনার ব্যবস্থা করেছে। যারা জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণের ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করে জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে ব্ল্যাকমেলিং করে তাদের বাংলাদেশে ব্ল্যাকমেলিং করার দিন শেষ হয়ে গেছে। বিএনপির প্রতিনিধি দল জাতিসংঘ কমপ্লেক্সের নিচে গিয়ে বারবার আবেদন করায় বিরক্ত হয়ে জাতিসংঘের তৃতীয় পর্যায়ের এক কর্মচারী এসে তাদের সঙ্গে আলাপ করেছে।’
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পার্লামেন্টের বাইরের কেউ এই সরকারে থাকবে না। নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট হবে। নির্বাচনের মূল দায়িত্বে থাকবে নির্বাচন কমিশন। সরকার নির্বাচন পরিচালনায় কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা করবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে শুরু করে যেসব প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, মন্ত্রণালয় দরকার হবে সেগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনস্ত হবে।’
এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘নির্বাচন যখন আসে তখন অনেক বিষয় মাথাচারা দিয়ে উঠে। অনেকেরই অনেক খায়েশ আছে। আমি শুরু এটুকু জানি- নির্বাচন হবে যথাসময়ে, সংবিধানের আলোকে।’
নিজের উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশের কোনো পলিটিশিয়ান উপন্যাস লেখেননি। সেই উপন্যাস নিয়ে কখনও ছায়াছবিও হয়নি। আমার লেখা উপন্যাস নিয়ে আবার ছবি হবে, সিনেমা হবে সেটা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। এক্ষেত্রে আমি মনে করি আমি একজন ভাগ্যবান মানুষ। আমার জীবনের একটি স্পেশাল ডে আজকে। আরেকটা কারণ আছে সেটাও স্পেশাল বহু দিন ধরে ফাইট করেছিলাম, ১৯৮৩ সালের সড়ক পরিবহন অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করার জন্য অবিরাম লড়াই করেছি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এই অধ্যাদেশটি আজকে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। আজকে আমরা আশা করছি সড়ক পরিবহন বিলটি সংসদে পাস হবে।’
মহরত অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সংস্কৃতিবিষয়ক আসাদুজ্জামান নূর, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম প্রমুখ।