সরকার উৎখাতে আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। এই অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং এই সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’
রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নবীন দল এর উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ জাতীয়তাবাদী সকল রাজবন্দিদের রোগ মুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।
সরকার বিরাগের বশবর্তী হয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। আমরা তাদের শত্রু না। কিন্তু বেগম জিয়াকে নিয়ে সরকার যে আচরণ করছে তা শত্রুতামূলক।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বেগম জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তাঁকে যদি এখন সুচিকিৎসা না দেয়া হয় তাহলে তাঁর প্যারালাইজড সহ চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা বার বার সরকারের কাছে তাঁর চিকিৎসার কথা বলা সত্বেও সরকার এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।’
বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে রক্ষা করার জন্য, গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য, জেলে যাওয়ার আগেই বেগম খালেদা জিয়া এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন এবং নির্বাচনে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়োগ করার পাশাপাশি, কোনো ইভিএম যন্ত্র ব্যবহার না করা, সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবিতে গতকাল দেশের বড় বড় রাজনীতিবিদ একই দাবিতে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। আমাদের দলও (বিএনপি) এই দাবির সাথে একমত পোষণ করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সকল রাজনীতিবিদ এর অংশগ্রহণে যে আন্দোলনের ডাক এসেছে তাতে প্রমাণিত হয় আগামীতে এই সরকার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হতে যাচ্ছে সে আন্দোলনেই সরকারকে শুধু পদত্যাগ নয় লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে।’
জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় আজ কারাবরণ করতে হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিচারের রায় হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগ নেতারা বেগম জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন- এমন মন্তব্য করেছেন। এটা কি আইনি অপরাধ না? কিন্তু বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে?’
গতকাল এক সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- যদি ক্ষমতা চলে যায় তাহলে লাইট দিয়েও আমাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না এমন বক্তবের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘তাদের এখন শুধু ভয় আর ভয়। এসব সরকারের অস্বস্তির কারণ।’
আজ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী গৃহহীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। যারা মৃত তাদের বিরুদ্ধে পর্যন্ত মামলা দেয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের পরিবারের পিতা-মাতাকে পর্যন্ত শাস্তি দেয়া হচ্ছে।’
নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। এই অত্যাচার সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং এই সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নজরুল বলেন, ‘সরকার এই আইন পাস করেছে কারণ সাংবাদিকরা যাতে সত্য কোনো নিউজ প্রকাশ করতে না পারে। সরকারের বিরুদ্ধে যেন না লিখতে পারে। সাংবাদিক নেতারা এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির বরাবর অভিযোগ করেছে যেন এই আইনে রাষ্ট্রপতি সিগনেচার না করে। আমরা সাংবাদিক নেতাদের এই দাবির পূর্ণ সমর্থন জানাই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহম্মেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি এম. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।