একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের তরুণ সমাজকে প্রাধান্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় ইশতেহার প্রস্তুত করছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক। ইশতেহারে তরুণদের নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা থাকছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ড. রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা তরুণ সমাজকে উন্নয়নের মহাসড়কে সম্পৃক্ত করতে চাই। দেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত তরুণ রয়েছে। তাদের জীবিকার উন্নয়নে আমরা আরও কিভাবে সম্পৃক্ত হবো সেটা ইশতেহার তুলে ধরা হবে।’
শনিবার ( ২৪ নভেম্বর) বিকেলে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ইশতেহার কমিটির বৈঠকের শুরুতে তিনি এসব কথা জানান ।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘১ কোটি ২০ লাখ নতুন ভোটার সঙ্গে প্রায় ৪ কোটিরও বেশি তরুণ জনশক্তিকে সম্পৃক্ত করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ইশতেহার সাজানো হচ্ছে। আমরা এরই মধ্যে একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছি।’
তিনি বলেন, ‘দফায় দফায় মিটিংয়ে চূড়ান্ত এ খসড়াপত্র এখন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার টেবিলে যাওয়ার অপেক্ষায়। উনার গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পরই জাতির সামনে চূড়ান্ত ইশতেহারপত্র পেশ করা হবে। দলের সভাপতি সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য আরও বলেন, ‘২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সম্মেলনে আওয়ামী লীগ একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করে। ওই ঘোষণাপত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্যগুলো তুলে ধরা হয়েছিল। সঙ্গে সামনের দিনে আমরা কী করবো সেগুলো আমরা সেখানে তুলে ধরেছিলাম। আজ আমরা যে ইশতেহার করছি সেটা ২০১৬ সালের ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে। এখানে ওই সম্মেলনে অংশ নেয়া কাউন্সিলরদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এবারের নির্বাচনী ইশতেহার আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দাবি করে থাকি সামাজিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের সময় উন্নতি হয়েছে। আমাদের এই উন্নয়ন সারা পৃথিবীতে নন্দিত হয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে। সারা বিশ্বের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন- আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১০ বছরের উন্নয়ন সারা বিশ্বের কাছে বিস্ময়।’
ড. রাজ্জাক বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে চাই, আমরা গত ১০ বছরে উন্নয়নের যে ভিত্তি রচনা করেছি সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ আগামীর পথে কিভাবে এগিয়ে যাবে তা আমাদের এবারের ইশতেহারে তুলে ধরা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সময়ে বাংলাদেশ সুনির্দিষ্ট প্রবৃদ্ধিসহ বহু বিষয়ে যথেষ্ট যোগ্যতা অর্জন করেছে। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে, উন্নয়নের যে মহাসড়কে আমরা অবস্থান করছি সেটাকে আরও বেগবান করার বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকবে।’
ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত বিষ তুলে ধরে রাজ্জাক বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা ৭.৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। এই প্রবৃদ্ধিকে আরও বাড়াতে চাই। আমরা এমডিজির সকল লক্ষ্য পূরণ করেছি। আমরা দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে চাই, অতি-দারিদ্র্যকে নির্মূল করতে চাই। আমাদের চ্যালেঞ্জ হবে পুষ্টি ও মানসম্মত খাদ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইশতেহারে পুলিশ বাহিনী কী হবে, দুর্নীতি কিভাবে কমে আসবে সেটা বলার চেষ্টা করবো। জনহিতৈষী একটি পুলিশ বাহিনী আমরা গড়তে চাই। সামষ্টিক অর্থনীতি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, ব্যাংক ব্যবস্থা কী হবে, বিনিয়োগ কিভাবে বাড়ানো, কৃষিতে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় আমাদের চেয়ে যুব সমাজের কাজের ব্যবস্থা কী হবে- সবই থাকবে ইশতেহারে।’
এবারের ইশতেহারে শিল্পায়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলেও জানান ইশতেহার কমিটির এই আহ্বায়ক।