আগামী ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে এখনো মনোনয়ন ঘোষণা করেনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অংশ জাতীয় পার্টি।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২ হাজার ৮শ’রও বেশি মনোনয়নপত্র বিক্রি করে চূড়ান্ত মনোনয়নের জন্য মোট তিনশ প্রার্থীকে বাছাই করেছে দলটি। যদিও জাতীয় পার্টিকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম বলছে, এবার ৪৭টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।
কিন্তু মহাজোটের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসায় জাতীয় পার্টি ঠিক কতগুলো আসনে মনোনয়ন দেবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। এর মধ্যেই বিভিন্ন আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিশেষ করে যারা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন তাদের কয়েকজনের নাম গণমাধ্যমে আসাকে কেন্দ্র করে দলটির মধ্যে কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আবার এর আগে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ছিলেন এমন আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা ঘোষণাকে কেন্দ্র করেও জাতীয় পার্টিতে ক্ষোভ বিক্ষোভ চরমে উঠেছে।
যেমন, ঢাকা-১ আসনে দশম সংসদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম। গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মহাজোটে থাকলেও এই আসনটি উন্মুক্ত ছিলেন এবং সালমা ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এবারও সেখানে ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনীত করায় চরম ক্ষুব্ধ সালমা ইসলাম।
সালমা ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘একটা অন্ধকারে আমরা রয়ে গেলাম। আমি ঢাকা-১ আসনের নির্বাচিত এমপি। গত দশ বছর এমপি আছি, ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। কিন্তু আজও জাতীয় পার্টি বা মহাজোট থেকে মনোনয়ন পাইনি। আমি মনোনীত হতে পারিনি অথচ নৌকার প্রার্থী দিয়েছে।’তবে এখন সময় শেষ হয়ে যায়নি এবং শেষ পর্যন্ত তিনিই মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছেন।মনোনয়ন না হলে কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তিনি চিন্তাই করতে পারেন না যে তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে আমিই মনোনয়ন পাবো।’
ওদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোনয়নের চিঠি দেয়ার পরপরই পরিষ্কার হয়ে যায় যে জাপার সিনিয়র নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এবার কক্সবাজার-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হচ্ছেন। এরপর থেকে সেখানে বিক্ষোভ করছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
পরে ওই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার দাবি করেছেন বর্তমান এমপি সাইমুম সারওয়ার কমল।
রওশন এরশাদ এবার দুটি আসনে প্রার্থী হতে চান। জিয়াউদ্দিন বাবলু গত সংসদে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন যেখানে এবার আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থী দিয়েছে।
তবে এখন ক্ষোভ-বিক্ষোভ যাই থাক জাতীয় পার্টির নেতারা আশা করছেন, মহাজোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর এসব সমস্যার অবসান হবে।
পার্টি মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে, চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হওয়ার মতো প্রার্থীদেরই মনোনয়নের জন্য তারা বিবেচনা করবেন।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন প্রার্থী সামাল দেয়াটা কষ্টকর হচ্ছে তাদের জন্য।