পাকিস্তান বা আইএসআইয়ের সঙ্গে বিএনপির কারও কোনও বৈঠক হয়নি দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলনগীর বলেছেন, ‘বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এমন বক্তব্য দিচ্ছে সরকারের মন্ত্রীরা। এসব বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হলে আইনের সহায়তা নিতে বাধ্য হবো।’
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমানের কথা না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু ওবায়দুল কাদের সাহেব এর মতো দায়িত্বশীল মন্ত্রী, যিনি কিনা আওয়ামী লীগের সাধারাণ সম্পাদক তার মুখ দিয়ে এমন চরম জঘন্য মিথ্যাচার শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিতই নয়, এটি রাজনৈতিক শিষ্টারচারের ওপর চরম আঘাত। এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘দৃঢভাবে বলতে চাই, কোনও দেশ কিংবা সংস্থার সঙ্গে এধরনের কোনও বৈঠক আমরা করিনি এবং লন্ডনেও এমন কোনও বৈঠক হয়নি। এটি বিএনপিকে হেয় করার জন্য আওয়ামী লীগের আরেকটি অপপ্রচার। এধরনের বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাই। অন্যথায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।’
এসময় বিএনপির বিরুদ্ধে সোসাল মিডিয়ায় চরম মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সোসাল মিডিয়ার ওপর যে আঘাত তা ভয়াবহ। আমাদের অনেক সোসাল একটিভিস্টদেট গুম করে ফেলা হচ্ছে। আর তিন শতাধিক ফেক আইডি এবং পেজ খোলে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। কার্টুন প্রকাশ হতে পারে। তাতে আমি কিছু মনে করি না। এটা হয়ে থাকে। কিন্তু কোনও রাজনীতিবিদের চরিত্র হরণ, চরম অপপ্রচার মানা যায় না।’
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির চরিত্র হরণ করা, অপপ্রচার চালানো তাদের আওয়ামী লীগের স্বভাব হয়ে গেছে। আমরা মামলাবাজ নই বলেই এখনো মামলা করিনি। আমরা এখন মামলা করবো। দেখবো সরকার এসবের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘বিএনপির অসংখ্য অলনাইন এক্টিভিস্টদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। আমি তাদের মুক্তি দাবি করছি।’
৫৮টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধে যে সুপারিশ করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন,‘ আমরা ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং ৫৭ ধারা অবশ্যই বাতিল করবো।’
কোনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার পরও দেশ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বার্থে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি- এমনটি জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দেশ থাকবে কি থাকবে না, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা থাকবে কি থাকবে না তা ঠিক হবে এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে।’
সরকারের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, ‘যে ভয়াবহ ভূমিকা আপনারা পালন করছেন, তা থেকে ফিরে আসুন। যদি দেশকে সত্যিকার অর্থে রক্ষা করতে চান নির্বাচনকে উন্মুক্ত করুন। যেন সব দল সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। অন্যথায় এই দেশ আবারও দীর্ঘকালের জন্য সংঘাতের দিকে যাবে, স্বাধীনতা হারাবে। দেশকে এমন অবস্থার দিকে নিয়ে যাবেন না।’
এসময় দলের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা:জাহিদ হোসেন ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।