পুলিশি হয়রানিসহ নানামুখী নির্যাতনের ফলে ধানের শীষ প্রার্থীদের জন্য ভোট চাওয়ার পরিবেশ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পল্টনের প্রীতম-জামান টাওয়ারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সই করা লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক জগলুল হায়দার আফ্রিক।
তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী ধানের শীষের প্রার্থী, নেতা-কর্মী সমর্থকদের ওপর পরিচালিত হামলা-মামলা-নির্যাতনের মুখে ঐক্যফ্রন্ট নেতা-কর্মীদের বড় একটা অংশ আজ ঘর ছাড়া। ফলে তারা নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। পোস্টার লাগানো এবং লিফলেট বিতরণ করা যাচ্ছে না।’
‘প্রচারে মাইক ভাঙচুর এবং মাইক বহনকারী যানবাহন ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের জন্য ভোট চাওয়ার পরিবেশ সম্পূর্ণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আর এই সুযোগে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে একপক্ষীয় প্রচারণা চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা’— বলেন জগলুল হায়দার আফ্রিক।
তিনি বলেন, ‘সবার জন্য যে সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়নি, তা এখন হলফ করে বলার প্রয়োজন নেই। বিষয়টি সবার জানা। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার করছে নির্বাচন কমিশন— যা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে প্রধান বাধা।’
‘নির্বাচন কমিশন সঠিক পথে ফিরে এসে গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিকতার পরিচয় দেবে— সে প্রত্যাশা আপামর জনসাধারণের। সে কারণেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিশ্বাস যে, মানুষ অবাধে ভোট প্রয়োগের সুযোগ পেলে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না’— বলেন আফ্রিক।
সংবাদ সম্মেলন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘৩০ তারিখের জন্য আমরা যে অপেক্ষা করছি, সেই অপেক্ষার প্রহরটাকে আরো কষ্টদায়ক, যন্ত্রণাদায়ক করার জন্য অতি উৎসাহী পুলিশের একাংশ, প্রশাসনের একাংশ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও একাংশ মিলে যে যৌথ প্রযোজনার নাটক তৈরি করেছেন, সেই নাটকের জবাব দিতে পারে একমাত্র জনগণ।’
‘যারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয় নিয়ে এসেছেন, তারা ৩০ তারিখে গণতন্ত্রের বিজয় এনে দিয়ে প্রতিটি অত্যাচারের, প্রতি ফোঁটা রক্তের জবাব দিন আপনাদের ভোটের মাধ্যমে’— বলেন আলাল।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ওপর অমানবিক হামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন অব্যহত রয়েছে। তারপরও আমরা ভোটের মাঠে রয়েছি। কারণ, জনগণের বিপুল জনসমর্থন আমাদের দিকে রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এবং জনগণ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলে আমরা ৯০ ভাগ ভোট পাব।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুসহ অন্যরা।