বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে দেশে আইয়ামে জাহেলিয়াতের ঘোর অমানিশা নেমে আসবে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন: বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট হলো অন্ধকারের শক্তি। বিএনপি- জামায়াত অপশক্তি নির্বাচিত হলে দেশ দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন, জঙ্গি-সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হবে।
শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নানক বলেন: এই অন্ধকারের অপশক্তি ক্ষমতায় গেলে কী হবে তা দেশের মানুষ ভালো করে জানে। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ আবারও রক্তের গঙ্গায় ভেসে অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। দেশের মানুষ বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দিবে না।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন: বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট ভূয়া ব্যালট পেপার ছাপিয়ে, ভুয়া বুথ তৈরি করে নকল ভিডিও বানিয়ে গুজব সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বির্তর্কিত করার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সর্তক থাকতে হবে। বিএনপি-নেতাদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে একের পর এক ষড়যন্ত্রের চিত্র ফুটে উঠছে।
‘‘বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিএনপি আর সুবিধা করতে পারছে না। ’’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন: আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়, দেশের উন্নয়ন হয়। আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে উন্নয়নের জোয়ারে সমৃদ্ধির নৌকায় আলোর পথে এগিয়ে যাবে।
নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করতে এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের মাঠে বিএনপি-জামায়াতের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ক্যাডার মাঠে নামবে বলে জানান তিনি।
নানক বলেন: এসব সংস্থার নামে বিএনপি-জামায়াতের হাজার হাজার ক্যাডার বাহিনীর সদস্য পর্যবেক্ষক কার্ড সংগ্রহ করেছে। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার এমন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়ায় নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এরা দলের পক্ষে কাজ করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার অপতৎপরতা চালাতে পারে।
তিনি অভিযোগ করেন: বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জড়িত এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বিরোধী। আমরা এই সকল প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে ছিলাম। তারা নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করার অপতৎপরতা চালাবে, তাই সকলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
নানক বলেন: নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়ে যা হচ্ছে সেটি শুধু নির্বাচন সম্পর্কিত বাংলাদেশের মূল আইন রিপ্রিজেশন অফ পাবলিক অর্ডার বা আরপিও এর লঙ্ঘনই নয়, আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি নীতির লঙ্ঘন। নির্বাচন পর্যবেক্ষক অনুমতি প্রদান আরপিও অনুচ্ছেদ ৯১সি’তে বলা হয়েছে রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষক হিসেবে অনুমতি দেয়া যাবে। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি আইনের এ বিধান লঙ্ঘন করে বিএনপি-জামায়াতের সরাসরি সম্পৃক্ত বা তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে সমর্থনকারী ও সহানুভূতিশীল ১১টি সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এসময় তিনি ৯টি সংস্থার নাম তুলে ধরেন। এগুলো হলো, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, খান ফাউন্ডেশন, লাইট হাউস, বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, নবলোক, কোস্ট ট্রাস্ট, শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট, নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। এই ৯টি সংস্থা ১৪০টি সংসদীয় আসনে ৬৫৮৫ জন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে।
বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা এ্যানফ্রেলের বিষয়ে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন: বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা এ্যানফ্রেল নিয়ে যা বলা হচ্ছে সেটি সত্য নয়। আরপিও’র ৯১ সি অনুযায়ী এ সংস্থাটিও অনুমতি পাওয়ার যোগ্য নয়। এই সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি হচ্ছে অধিকার। অধিকারের চেয়ারম্যান আদিলুর রহমান শুভ্র। যিনি সরাসরি বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তা সত্ত্বেও এ্যানফ্রেলের ৬ জন প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের অনুমতি পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আহমদ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির কাউসার এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অনেকে।