আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। রাত পোহালেই বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল রোববার উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেয়ার অপেক্ষায় আছেন ১০ কোটির বেশি ভোটার। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে ব্যাপক আগ্রহের তৈরি হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও গণমাধ্যম বাংলাদেশের নির্বাচনকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ কআবারও
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও আর্থিক খাতে চাঙাভাব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সুবিধাজনক অবস্থানে রেখেছে। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা বেগবান হতে পারে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্রমশ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন কোম্পানি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। ভিয়েলল্যাটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ডেভিড হাসানাত বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে এবং এটি বজায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
গণমাধ্যমটি বলছে, কয়েক বছর ধরে হওয়া উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া ক্ষমতাসীন দল আবারও ক্ষমতায় আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে অর্থনৈতিক নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং বিদেশি বিনিয়োগের নিয়মিত প্রবাহ রক্ষায় তা সহায়ক হবে।
বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেকর্ড চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসছেন শেখ হাসিনা।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক দ্য হিন্দুর সম্পাদকীয়তেও বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। শুক্রবার প্রকাশিত এই সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের ক্রমাগত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তুলনামূলক উচ্চ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত এক দশকে সামাজিক সূচকেও উন্নতি করেছে বাংলাদেশ।
ভারতের আরেকটি প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত নির্বাচনগুলোতে বিএনপিকে ভারতবিরোধী প্রচার প্রচারণা করতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার সেটা পরিলক্ষিত হয়নি।
ঢাকায় ভারতের একজন কূটনীতিক বলেন, এটি খুবই চমকপ্রদ যে নির্বাচনী প্রচারের সময় দুটি প্রধান দল ভারতের কথা উল্লেখ করেনি।
তিনি বলেন, হিযবুত তাহরিরের মতো একটি ইসলামী গোষ্ঠী ভারতবিরোধী কিছু বক্তব্য দেয়া ছাড়া বিএনপি বা আওয়ামী লীগের কোনও নেতা নির্বাচনী প্রচারে ভারতবিরোধী অনুভূতি নিয়ে কোনও কথা বলেননি।
ভারতীয় ওই কূটনীতিক আরও বলেন, আমি মনে করি-তারা (বিএনপি) হয়তো বুঝতে পেরেছে ভারতকে দূরে সরিয়ে রেখে বিএনপির কোনও লাভ হয়নি।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ডনও তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আবারও ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার ভূমিধস জয়ের পর প্রতি বছর গড়ে ৬.৩ শতাংশ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দ্য ডনের প্রতিবেদনে একটি জরিপের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।