হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর মেয়েদের লেখাপড়ার বিরুদ্ধে দেওয়া অবৈধ ফতোয়ার প্রতিবাদে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেছেন নারী শ্রমিক নেতারা। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক নর-নারীর জন্য ফরজ। কিন্তু আল্লামা শফী নারীদের পড়াশোনা না করার ফতোয়া দিয়েছেন। এটা নিঃসন্দেহে হাদিসবিরোধী বক্তব্য।’
তারা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারদলীয় নেতা নারী, বিরোধী দলেও নারী নেতা আছেন। হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী নারী। নারীরা শিক্ষিত না হলে দেশের উন্নয়ন বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এ অবস্থায় হেফাজতের আমির আহমদ শফী নারীদের পড়াশোনা না করার ফতোয়া দিয়েছেন। এটা নিঃসন্দেহে একটি দেশের উন্নয়নের ধারা ব্যহত করার ফতোয়া।’
তাই অনতিবিলম্বে আল্লামা শফীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন তারা।
শ্রমিক নেত্রী লাভলী আক্তারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার জুমআর নামাজের পর মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার ১১৮তম মাহফিল ও দস্তারবন্দি সম্মেলনে বক্তব্য দেন হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি বলেন, ‘আপনাদের মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে পড়াবেন না। বেশি হলে ক্লাস ফোর-ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে পারবেন। আর বেশি যদি পড়ান পত্রপত্রিকায় দেখতেছেন আপনারা। ওই মাইয়া (মেয়ে) ক্লাস এইট, নাইন, টেন, এমএ ও বিএ পর্যন্ত পড়ালে কিছু দিন পর আপনার মেয়ে থাকবে না। তাই আপনারা আমার সঙ্গে ওয়াদা করেন। বেশি পড়ালে আপনার মেয়েকে টানাটানি করে অন্য পুরুষ নিয়ে যাবে। আমার এ ওয়াজটা মনে রাখবেন।’
এর একদিন পর শনিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আল্লামা শফী দাবি করেন, মাহফিলে দেওয়া তার বক্তব্যের একটি খণ্ডাংশ বিভিন্ন মিডিয়ায় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন, ‘বক্তব্যে আমি মূলত বলতে চেয়েছি- ইসলামের মৌলিক বিধান পর্দার লঙ্ঘন হয়, এমন প্রতিষ্ঠানে নারীদের পড়াশোনা করানো উচিত হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এখানে শিক্ষা থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনাসহ যাবতীয় সব কিছুই রয়েছে।’
আল্লামা শাহ আহমদ শফী বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘ইসলামে নারীদের শিক্ষার বিষয় উৎসাহিত করা হয়েছে এবং সবাই অবগত যে, উম্মুল মুমিনিন হজরত মা আয়েশা (রা.) ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস। তিনি শিক্ষাগ্রহণ না করলে উম্মত অনেক হাদিস থেকে মাহরুম হয়ে যেত।’
সূত্র ঃ আমাদের সময়