হতাশাই শেষ কথা হতে পারে না’ বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব রয়েছে তা হলো কোনোমতে যেন হতাশার জন্ম না হয় তার জন্য সজাগ থাকা। এবং প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব এখন জাতীয় ঐক্যকে আরও সুসংগঠিত করা।’
বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টির (জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী’র স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে এককভাবে সংগ্রাম করে বিজয় লাভ করবেন তাহলে আমি মনে করবো, তিনি সঠিক বিষয়টি উপলদ্ধি করতে পারছেন না। আজকে তাদেরকে (ক্ষমতাসীন) পরাজিত করতে হলে জনগণের ঐক্যের কোনও বিকল্প নেই। এবং সেই জনগণের ঐক্যের মধ্য দিয়েই আপনাকে বিজয় লাভ করতে হবে।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন যেটি হয়েছে তা বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব প্রত্যাখ্যান করেছে। এটা নিয়ে আর কোনও প্রশ্ন থাকে না। দেশে কোনও নির্বাচন হয়নি। এটা একটা তামাশা হয়েছে। প্রহসন হয়েছে। এই প্রহসন একটা নিষিদ্ধ প্রহসন। এতে মানুষের অধিকারকে হত্যা করা হয়েছে। ভোটারদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন- এমনটা আওয়ামী লীগ কেন করলো? আমি বলবো- এতে আওয়ামী লীগের একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। আওয়ামী লীগ এদেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দলের একটি, তাদের গণতন্ত্রের গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। কিন্তু এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ লোকেরাই প্রশ্ন তুলেছে, ‘আমার ভোট আমি দিতে পারলাম না কেন?’ সমস্যা হলো আওয়ামী লীগের স্বভাবজাতভাবে যে চরিত্র তা আমরা স্বাধীনতার পর থেকেই দেখে আসছি। আওয়ামী লীগ সবসময় মনে তারা মালিক। একই সাথে ভিন্ন মতকে তারা সহ্য করে না। জনগণ হচ্ছে তাদের সত্যিকার অর্থে প্রজা। যে কারণে জনগণের অধিকারকে তারা কখনই স্বীকৃতি দেয় না।’
সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের যে সংবিধান রয়েছে তার একটা একটা পরিবর্তন করে একদলীয় বাকশালে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের আরও বিজ্ঞজন রয়েছেন। তারাও এ বিষয়গুলোকে এড়িয়ে গিয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্টত প্রমাণ হয়েছে, বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে বর্তমান সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। এবার নির্বাচনে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে রাষ্ট্রের জুডিশিয়াল থেকে শুরু করে আনসার পর্যন্ত। যাদেরকে সরকার ব্যবহার করেছে। এই সরকারের ক্ষমতায় যাওয়ার মূল বিষয় হচ্ছে দেশকে একদলীয় শাসনব্যবস্থায় নিয়ে আসা।’
জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ বক্তব্য দেন।