একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশ আজ শনিবার। হ্যাটট্রিক জয়কে স্মরণীয় করতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটি সমাবেশের আয়োজন করেছে। এ সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন । বিজয় উৎসবকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাজ সাজ রব।
এ সমাবেশে বেলা ১১টা থেকে নেতা কর্মীরা প্রবেশ শুরু করবেন। দুপুর বারোটা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। দুপুর আড়াইটায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হবেন।
সমাবেশ সফল করতে বিগত কয়েক দিন দফায় দফায় নানা বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এবং ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেবেন। ইতিমধ্যে এটাকে স্মরণীয় করে রাখতে সব প্রস্তুতিও শেষ করেছে তারা।
এদিকে উদ্যানের মাঠের ভেতরের পুকুরের পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। যার সামনের অংশ দলীয় প্রতীক নৌকা আকৃতির। মঞ্চের ওপরে লেখা ‘সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’। মূল মঞ্চের ব্যাকগ্রাউন্ড একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী ইশতেহারের মলাটের রঙের আদলে সজ্জিত করা হয়েছে। দক্ষিণমুখী মঞ্চের সামনের মাঠে তৈরি করে রাখা হয়েছে ছোট ছোট নৌকা। নৌকার পালের ওপরে কোনোটায় লেখা ‘জয় বাংলা’ আবার কোনোটায় লেখা ‘বাংলার জয়’।
গতানুগতিক সমাবেশের বাইরে উৎসবের আবহে উদযাপন করতেই এ ‘বিজয় উৎসব’। দেশবরেণ্য শিল্পীরা নাচ-গানের মাধ্যমে প্রাণবন্ত করে রাখবেন সমাবেশস্থল। বিজয় সমাবেশকে বিজয় আনন্দে রূপ দিতে বরণ্যে শিল্পীরা বিভিন্ন গান পরিবেশন করবেন। তাই মহাসমাবেশের মঞ্চের পাশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য আরেকটি মঞ্চও করা হয়েছে। গান পরিবেশন করবেন আঁখি আলমগীর, রফিকুল আলম, ফাহমিদা নবী, কল্পনা মজুমদার ও জলের গান-এর দল।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিবেদন করে ‘আপনার জন্ম একটি নতুন সময়ের ইঙ্গিত’ কবিতা আবৃত্তি করবেন কবি রাসেল আশেকী।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজের গানে গানে বিজয় সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত হবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নির্বাচনে সাড়া জাগানো ‘জিতবে এবার নৌকা’ গানের শিল্পীদের পরিবেশনা শুনবেন।
সঙ্গীত শিল্পীদের পরিবেশনার পর নেতাদের বক্তব্য শেষে জনগণসহ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিজয় বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা। এরপর নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেবেন। যার মধ্যে দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয় গুরুত্ব পাবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সমাবেশে ২০২১, ২০৪১ ও ২১০০ সাল সহ ডেল্টাপ্লান সম্পর্কেও আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মূল অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
এদিকে এ মহাউৎসবকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনের তথ্যসংবলিত পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানো হয়েছে। পুরো উদ্যানে ছেয়ে গেছে ছোট বড় নৌকায়। উৎসবের ভিন্নমাত্রা দিতে লাল-সবুজের পতাকা ও লাল ফিতা হাতে নিয়ে মাঠে থাকবে যুবলীগের ৫২ হাজার নেতাকর্মী। প্রত্যেক ওয়ার্ড থেকে ৭০০ নেতাকর্মী লাল-সবুজের গেঞ্জি পরে মিছিল নিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উপস্থিত হবেন। তাদের হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং লাল ফিতা থাকবে।
এবারের মহাসমাবেশে সর্বসাধারণের প্রবেশের জন্য গেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা গেটের ব্যবস্থা। এছাড়া অন্যান্যবারের তুলনায় এবার টয়লেটের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
বিজয় মহাসমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তাবলয় ও সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
এছাড়া বিজয় উৎসব চলার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এদিন শাহবাগ থেকে মৎস্যভবন পর্যন্ত সড়কে লোকজনের চলাচল বন্ধ থাকবে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে।