আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা দুর্নীতি করেছেন। এই আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতির দায়ে তার ১০ বছরের সে সাজা বেশি হয়নি। তার থেকেও বড় কথা হলো এটা প্রমাণ হয়েছে যে, দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী ব্যক্তিও আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘দুর্নীতিবিরোধী অভিযান ও নেতৃত্বের সাফল্য’ শীর্ষক সেমিনারে আইনমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি দমন করা যায় না। দুর্নীতি করলে আইন দিয়ে শাস্তি দেওয়া যায়। তার মানে এই দাঁড়ায় দুর্নীতি আগে করতে হবে তারপর আইনের প্রয়োগ। শুধুমাত্র আইন দিয়ে দুর্নীতি দমন করা যায় না। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ডুবে থাকা দুর্নীতি দূর করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় সিলেবাস পরিবর্তন করতে হবে।’
দুর্নীতি দূর করতে সরকার মুলে হাত দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, “আদর্শলিপিতে ‘সদা সত্য কথা বলিবা’ আমরা ছোট বেলায় শিখেছি, এটা কিন্তু আমাদের মাইন্ড সেট পরিবর্তন করে দেয়। আমাদের শিশুদের যদি এইসব ভ্যালুস সম্পর্কে পড়ানো হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে দুর্নীতি গ্রহণ করবে না।”
এ জন্য আমাদের পাঠ্য পুস্তকের মধ্যে এসব সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করব। আমি চেষ্টা করব নার্সারি থেকে আমাদের পাঠ্য বইয়ে এই রকম আদর্শের কথা লেখা হয়। যেখানে এই রকম আদর্শের সাফল্য কোথায় এবং আদর্শ না মানলে তার পরিণাম কি হয়, সে সম্পর্কে বলা থাকবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব দুর্নীতির মুলে হাত দিয়েছি। যার কারণে গুটিকয়েক স্বঘোষিত নেতা বলছেন এই দেশ ঠিকমত চলছে না। বরং তারাই দুর্নীতির মধ্যে ডুবে আছে বলেই তারা এসব বলছে।’
এর আগে লিখিত বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে আর দুর্নীতি হতে দেওয়া যায় না। কারণ দুর্নীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে আঘাত করছে। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। দুর্নীতি সামাজিক অবক্ষয় ও সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতির কারনে অনেক পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে সে পেশার আদর্শ ও নৈতিকতা। তাই যে কোন মুল্যে আমাদের দুর্নীতি দমন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি দুর্নীতি প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সর্বক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে কারণ সবকিছিু ডিজিটাল হলে দুর্নীতি স্বয়ক্রিয়ভাবে কমতে থাকবে।’
সংগঠনটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল একে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব), কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়, ড. মিল্টন বিশ্বাস অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।