দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের কোথাও জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের সামান্য আলামত পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন। এ ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর বিরুদ্ধে দেশের সব মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা এ ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে আর দেখতে চাই না। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
সোমবার জাতীয় সংসদে প্রবীণ সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ কার্যপ্রণালীর ১৪৭ বিধির আওতায় একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সেই আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে, শ্রীলঙ্কার চার্চে ও হোটেলে- এই ধরনের ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই। এই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণকে আহ্বান জানাব, সকলকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের দেশেও চেষ্টা করা হয়েছিল, হোলি আর্টিজানের ঘটনা। আমরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনা দমন করতে সক্ষম হই।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এখন শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। কাজেই এটা যেমন আমাদের দেশে মোকাবেলা করতে হবে আবার বিশ্বব্যাপী একটা জনমত সৃষ্টি করতে হবে। এই ধরনের ঘটনার যেন আর না ঘটে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে মেয়েদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন; শিক্ষক যদি রক্ষক হয়ে ভক্ষক হয়, এর থেকে লজ্জার আর কিছু থাকে না। আর সেটাও মাদরাসার। যারাই এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব। দল-মত আমি দেখব না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমনে যা যা করণীয় আমরা তা করব। এই ধরনের যৌন নিপীড়ন যারা করবে তাদেরও ক্ষমা নেই। অনেক সংসদ সদস্য বলেছেন এর জন্য একটা কঠোর আইন করা দরকার। আমরা ইতোমধ্যেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচারের ব্যবস্থা করেছি। গোয়েন্দা তদারকি বৃদ্ধি করেছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রয়োজনে এর জন্য যদি কঠোর আইন করতে হয় অবশ্যই আমরা কঠোর আইন করব। যারা এই ধরনের যৌন নিপীড়ন করবে তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়। সেই ব্যবস্থা আমরা করব।
জঙ্গি হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটায় আসলে তাদের কোনও ধর্ম নেই। কোনও মুসলমান যদি এই ধরনের জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড করে আর ঈদের জামায়াতে আক্রমণ করার চিন্তা করতে পারে বা আক্রমণ করে তাহলে সে আবার কিসের মুসলমান?
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা, এইভাবে যদি একটি রাজনৈতিক দল অগ্নিসন্ত্রাস না করতো, যদি পুড়িয়ে মানুষ হত্যা না করতো তাহলে হয়তো নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার কথা মাথায় আসতো না। আজকে সকলকেই এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-অগ্নিসন্ত্রাস, রেপ বা যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সকলকেই সোচ্চার হতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা সেটাই চাই। এখানে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে মানবতার কথা বলবে।