বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনায় কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত স্থাপনের সঙ্গে সাংবিধানিক কোনও প্রসঙ্গ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এটা নিয়ে তো বিএনপির খুশি হওয়ার কথা। কারণ বেগম জিয়াকে বারবার কারাগার থেকে আদালতে আসতে হবে না। তাঁর শারীরিক কষ্ট হবে না। বেগম জিয়ার শারীরিক কষ্ট লাঘব করার জন্যই তো কেরানীগঞ্জ কারাগারে আদালত স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তারও একটি বিষয় আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেরাণীগঞ্জে আদালত স্থাপনের সঙ্গে সাংবিধানিক কোনও প্রসঙ্গ নেই। এটা সাংবিধানিক কোনও বিষয়ও নয়। এটি প্রশাসনিক বিষয়। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে আইন-আদালতকে সহযোগিতা করা। আইন ও বিধান অনুযায়ী কেরাণীগঞ্জে আদালত স্থাপন করা হয়েছে।’
বুধবার (২২ মে) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)র সেমিনার হলে পিআইবি-এটুআই গণমাধ্যম পুরস্কার ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়াকে সহায়তা করার জন্যই আদালত বসানো হয়েছে। একইসঙ্গে এটি বেগম জিয়ার সহায়তার জন্য বসানো হয়েছে। বিএনপি বারবার অভিযোগ করছে, জনগণকে বলছে- বেগম জিয়া প্রচণ্ড অসুস্থ। কিন্তু তাঁর শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, সেগুলো অনেক পুরানো। এই সমস্যা নিয়ে তিনি দুবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। বিরোধী দলের নেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সুতরাং তাঁর সুবিধার্থেই কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র বলেন, ‘আদালত স্থাপন করা একটি কথা, আরেকটি হচ্ছে বিচার কার্যক্রম। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারান্তে কি করবেন, সেটি বিচারকের বিষয়। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে বিচার কার্যক্রমকে সহায়তা করা। সেখানে আসামিদের সুবিধার্থে, বেগম জিয়ার সুবিধার্থে ও নিরাপত্তা বিবেচনায় কেরানীগঞ্জে আলাদত স্থাপন করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক দলের চাওয়া পাওয়ার বিষয় থাকতে পারে না। আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আদালতের সুবিধার বিষয়টি হচ্ছে মুখ্য। একই সাথে যিনি আসামি তার সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে। সেই সমস্ত বিষয় বিবেচনায় নিয়েই হয়তো সেখানে আদালত স্থাপন করা হয়েছে।’
শ্রমিক আন্দোলনে টাকা দেয়া নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘অতীতে বিএনপি নিজেরাই অনেক নাশকতা করেছে। বাংলাদেশের মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। হাজার হাজার মানুষকে আগুনে ঝলসে দিয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করেছে। এখন তো নিজেদের আন্দোলন করার কোনও সামর্থ্য নাই। তাই অন্যরা যখন আন্দোলন করে, সেখানে তারা টাকা পয়সা দিয়ে সেটিকে বিভ্রান্তি করার জন্য, নাশকতা করার জন্য চেষ্টা চালায়। এটা আমরা অতীতে বহুবার বলেছি। তাদের এই ধরনের কার্যক্রম অতীতেও বহুবার ফাঁস হয়েছে।’
পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এন এম জিয়াউল আলম, এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী প্রমুখ।