খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। আজ মঙ্গলবার কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে ইউএইর খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মিস মারিয়ম আলমেইরির নের্তৃত্বে এক প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতে তারা এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।মন্ত্রণালয়ে কৃষিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে কথা হয়।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রী বলেন, ‘এক সময়কার খাদ্য ঘটতির দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের প্রধান ফসল ধান হলেও দেশে এখন গম ও ভুট্টা চাষ হচ্ছে। ভুট্টা আমাদের পোল্ট্রি শিল্পের প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এর বড় একটি অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। আগামী দু-এক বছরে আমাদের চাহিদার প্রায় সবটুকু ভুট্টা উৎপন্ন করতে সক্ষম হবো।’
সরকারের এ মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আমাদের কৃষকবৃন্দ উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না। যেকোনো পণ্যের উৎপাদন বেশি হলেই এ সমস্যা হয়। এই সমস্যা নিরসনে খাদ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাত ও বাণিজ্যিকরণ অপরিহার্য। মোট কথা, আধুনিক ও বাণিজ্যিক কৃষির জন্য বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। কৃষিকে শতভাগ যান্ত্রিকীকরণের জন্য যা যা করা দরকার, সরকার সব করবে।’ ২০০১ ও ২০০৭ সালে আইলা ও সিডরে আরব আমিরাতের সহায়তার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান কৃষিমন্ত্রী।
মারিয়ম আলমেইরি বলেন, ‘বাংলাদেশে তারা কৃষিখাদ্য প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থাপন করতে চায়।’ অবকাঠামোর পাশাপাশি কৃষিতেও তারা অংশ গ্রহণের আগ্রহের কথা জানান।
জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষির অগ্রগতির সঙ্গে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, কর্মসংস্থান প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশের সাফল্য এখন বিশ্বের জন্য উদাহরণ। কৃষি উৎপাদন বাড়ার পেছনে প্রধান কারণ কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি, বীজ, সার এবং যন্ত্রের ব্যবহার। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ এবং পরিবেশ সহিষ্ণু বিভিন্ন ফসল।’
বাংলাদেশে ইউএই সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কৃষিখাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে জানিয়ে মারিয়ম আলমেইরি বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ফসলের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতের বড় সম্ভাবনা রয়েছে এক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের কৃষির যেমন চ্যালেঞ্জ রয়েছে তেমনি সম্ভাবনাও রয়েছে ব্যাপক। কৃষির এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে আরব আমিরাত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
প্রতিনিধি দলে আরব আমিরাতের ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সাইয়েদ মুহম্মদ সাইয়েদ হামেদ আলমেহেরি, অ্যাম্বাসির প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আলহমউদি, সুমাইয়া সালেম আলোরাইফি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।