মৌলভীবাজারে দুর্ঘটনার শিকার ‘উপবন এক্সপ্রেস’ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অব্যবস্থাপনার কারণে রেলের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্ত্রিপরিষদকে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে তিনি এই তথ্য জানান। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
সচিব জানান, বৈঠকের শুরুতেই রেলমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদকে বলেছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও সিলেটের মধ্যে রেল ও সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে। মন্ত্রী বলেছেন, মানুষ হুমড়ি খেয়ে রেলে ওঠে। তাই এই দুর্ঘটনা। রেল সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন ঘটনাস্থলে আছেন। ঢাকা থেকে সামগ্রিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দ্রুতই ঢাকা ও সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে।
এদিকে মৌলভীবাজারের দুর্ঘটনায় চার জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে মন্ত্রিপরিষদকে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তবে তিনি আরও জানান, হেলে পড়া রেলের বগির নিচে আরও লাশ থাকতে পারে।
এই দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী রেলের নাজুক ও দুর্বল সেতুগুলো শনাক্ত করে নতুন করে নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকার কাছেই সেতু ভেঙে আন্তঃনগর ‘উপবন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়। এছাড়া আরও তিনটি বগি স্থলভাগের সীমানায় লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে।
এতে পাঁচটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ শুরু করে। পুলিশ, বিজিবি ও স্থানীয় লোকজনও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন শাজাহান কবীর চৌধুরী জানান, এই ঘটনায় চার জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন জন পুরুষ ও একজন নারী। কুলাউড়া ও মৌলভীবাজার হাসপাতালে মোট ৬৭ জন আহত ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান, সোমবার ভোরে সাতটি সচল বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় দুর্ঘটনাকবলিত উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি।