প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ বিকেলে চীনের দালিয়ানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে বেইজিং সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ঢাকায় আসেন। এর মধ্যে দুই দেশে উচ্চপর্যায়ের সফর হয়েছে মাত্র দুটি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রোহিঙ্গা ইস্যুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক যেকোনো চাপের চেয়ে চীনের সুনজর যথেষ্ট। তারা বলেন, চীনই এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে।
সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালিউর রহমান বলেন, “চীন আমাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছে তাতে এটি সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। চীন হয়তো মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বলতে পারে কিংবা বলতে পারে তোমরা জাতিসংঘে আস, আমরা ভেটো দেব না।”
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি১৭২০) সোমবার বিকেলে দালিয়ানের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
সফরকালে তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
সোমবার চীনের দালিয়ানে তিন দিনব্যাপী ‘ডব্লিইএফ অ্যানুয়েল মিটিং অব দ্যা নিউ চ্যাম্পিয়নস-২০১৯’ শুরু হবে। যা ডব্লিউইএফ সামার দাভোস নামেও পরিচিত।
২ জুলাই (মঙ্গলবার) সকালে প্রধানমন্ত্রী দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠেয় ডব্লিউইএফ সামার দাভোস সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস শোয়াবের কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বিকেলে ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন।
বিকেলে দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে শোয়াবের দপ্তরে অনুষ্ঠেয় ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারের সরবরাহকৃত একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানে স্থানীয় সময় সকাল ১১ টায় বেইজিংয়ের উদ্দেশে দালিয়ান ত্যাগ করবেন। একই দিন বিমানটি স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছবে।
বিকেলে তিনি বেইজিংয়ের লিজেনডাল হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দিবেন।
এবারের সফরে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক, বিদ্যুৎ, তথ্য-প্রযুক্তি এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর সই হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ।
চীন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় ৬ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন এবং একই দিন বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) পৌঁছবেন ।