গলাবাজি-মিথ্যাচার করা ছাড়া বিএনপির আর কোনো রাজনীতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কৌশলগত কারণে এক পা পিছিয়ে যাওয়াকে ব্যর্থতা বলা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ শনিবার রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ১৫ জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিআরটিসি শ্রমিক কর্মচারী লীগ ( সিবিএ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ডেঙ্গুকে ভুলে গিয়ে শোকের মাস পালন করছি না। আমার সবকিছু একসঙ্গে করছি। এই শোকের আবহ যারা সৃষ্টি করেছে, এই শোকের মাস নিয়ে নিষ্ঠুর তামাশাও তারা করছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধ, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে প্রথম দিকে প্রক্রিয়াটা একটু স্লো হলেও বর্তমানে সরকারের সমন্বিত সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এক মুহূর্তের জন্য ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ এবং এসিড নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সরকারের কোনো শাখা, কোনো প্রতিষ্ঠানের শৈথিল্য প্রদর্শনের নজির নেই। প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটরিং করছে। আমার শোকের মাসের কর্মসূচি পালন করছি এবং নিয়ন্ত্রণেও আমার সর্বাত্মক কর্মসূচি পালন করছি।’
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আজকে যারা বলেন, এখানে কূটনৈতিক প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। আমি বলব, এটা সঠিক কথা নয়। কারণ আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক প্রয়াস এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই ব্যাপারে আমাদের মনে রাখতে হবে মিয়ানমারেরও বন্ধু আছে এবং শক্তিশালী বন্ধু আছে। বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। মিয়ানমার বন্ধুহীন এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজে সব কিছু মিলিয়ে আজকে জাতিসংঘ, আমেরিকা, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ের এটা আমার মনে হয় শেখ হাসিনা যতটা কূটনৈতিক সফল্য অর্জন করেছে, এটতা কোনো দেশের সম্ভব হয়নি। এখানকার সমস্যা যত জটিল, এই জটিলতার মধ্যে যুদ্ধ পরিহার করে। বারবার যুদ্ধের উসকানির মধ্যেও ঠাণ্ডা মাথায় শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবেশির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রাখছেন।’
এখানে কূটনীতিক ব্যর্থতার কোনো বিষয় নয়, এখানে কৌশলগত কারণ রয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন,‘অনেক সময় দুই পা এগিয়ে গেলে এক পা পিছিয়ে পড়ে। সেই বাস্তব কারণে এক পা পিছিয়ে গেলে সেটাকে কূটনীতিক ব্যর্থতা বলা সঠিক হবে না। রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে আসার পর মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক চাপ অনুভব করছে। আমরা আরও চাপ অব্যাহত রাখব। মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার দায় নিতে হবে। আমরা যুদ্ধের পথে যাব না। ঠাণ্ডা মাথায় কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সীমান্ত খুলে দিয়ে ১১ লাখ রিফিউজিকে আশ্রয় দিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসের কোনো দেশের সীমান্ত দিয়ে এত রিফিউজি আশ্রয় দেয়নি। মানবতার মাতা শেখ হাসিনা, মানবতার সব দৃষ্টান্ত পেছনে ফেলে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। ১১ লাখ রোহিঙ্গা লালন পালনে আমাদের টুরিজম এফেক্ট হচ্ছে। আমাদের ইকোলজি এফেক্ট হচ্ছে, আমাদের ইকোনমিক এফেক্ট হচ্ছে। আমাদের পর্যাটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমদ ভূইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ প্রমুখ।