মানবসৃষ্ট নানা কারণে সাগর-মহাসাগর আজ হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সমুদ্র উপকূলীয় দেশগুলোর সংগঠন ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের তৃতীয় ব্লু ইকোনমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অপ্রিয় হলেও সত্যি যে মনুষ্য-সৃষ্ট নানা কারণে আমাদের সাগর আজ ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন।’ তিনি বলেন, মাত্রাতিরিক্ত সম্পদ আহরণ, পরিবেশ দূষণ, তেল নিঃসরণ, প্লাস্টিক বর্জ্য দ্বারা দূষণ, শব্দ দূষণ ও সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তন এসবের অন্যতম কারণ। এর ফলে সাগর/মহাসাগরের উষ্ণতা বাড়ছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
এসময় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে গিয়ে সাগরের স্বাভাবিক পরিবেশ যেন নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘শান্তি, নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। খেয়াল রাখতে হবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে গিয়ে যেন সমুদ্রের সুস্থ পরিবেশ বিঘ্নিত না হয়। তাই আমাদের সুনীল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি সুনীল চিন্তাও করতে হবে।’
সমুদ্রকেন্দ্রিক অপরাধের বিষয়ে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমুদ্রকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের সতর্ক হতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে, মহাসাগর ও তার বিপুল সম্পদ সংরক্ষণে আমরা যত বেশি বিনিয়োগ করব, যত বেশি পদক্ষেপ নেব, তা সামগ্রিকভাবে দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশাবাদী, এ সম্মেলন শেষে ঢাকা ঘোষণা হিসেবে যা গ্রহণ করা হবে তা ভবিষ্যতে আমাদের সহযোগিতা ও সমন্বয়কে মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তুললে সক্ষম হব।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জোট আইওআরএর এটি তৃতীয় আঞ্চলিক সম্মেলন। সম্মেলনের সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম ইউনিট। এটি ঢাকায় গত বছরের ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের পর মন্ত্রীপর্যায়ের দ্বিতীয় বড় আয়োজন। এতে ২২ সদস্য রাষ্ট্র এবং ৯টি ডায়ালগ পার্টনারসহ মোট ৩১ রাষ্ট্রের প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন।