ছাত্রদলের কাউন্সিল : সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় জাকির
১৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ কাউন্সিল। কাউন্সিলরদের দরজায় কড়া নাড়ছে প্রার্থীরা। দীর্ঘ ২৭ বছর পর প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল শীর্ষ নেতৃত্ব বেছে নেবে। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে ছাত্রদলের পঞ্চম কাউন্সিলে সরাসরি ভোটে বিএনপির বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও গুম হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ সালে ভোট হচ্ছে। ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশের ১১৭টি ইউনিটের ৫৮০ জন্য ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নতুন নেতা নির্বাচন করবেন।
সভাপতি পদে লড়ছেন , প্রার্থী ফজলুর রহমান খোকন, হাফিজুর রহমান, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, মো. এস এম সাজিদ হাসান বাবু, মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, রিয়াদ মো. তানভীর রেজা রুবেল, মো. এরশাদ খান, এবিএম মাহমুদ আলম সরদার।
সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন মো. আমিনুর রহমান আমিন, মো. জুয়েল হাওলাদার (সাইফ মাহমুদ জুয়েল), ডালিয়া রহমান, শেখ আবু তাহের, শাহ নাওয়াজ, মোহাম্মদ কারিমুল হাই (নাঈম), মাজেদুল ইসলাম রুমন, সাদিকুর রহমান, কে এম সাখাওয়াত হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, মো. হাসান (তানজিল হাসান), মুন্সি আনিসুর রহমান, মো. মিজানুর রহমান শরিফ, শেখ মো. মশিউর রহমান রনি, মোস্তাফিজুর রহমান, সোহেল রানা, কাজী মাজহারুল ইসলাম ও মো. ইকবাল হোসেন শ্যামল।
দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনার শীর্ষে আসছেন মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের সৈনিক হিসেবে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাকির। এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলরদের ভোটের নির্বাচিত হলে কমিটি বাণিজ্য হবে না বলেও জানান।
মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স শেষ করেন। কিন্তু ছাত্রদলের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় ক্যাম্পাসে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি। ফলে এম এসসি শেষ করতে পারেননি। এছাড়াও রাজীব আকরাম কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এর আগে ছাত্রদল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১নং যুগ্ম আহবায়ক ও আলবেরুনী হল শাখা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ছাত্রজীবনের রাজনীতি করতে গিয়ে পুলিশী হয়রানী হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে অনেকবার। ওয়ান ইলেভেন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে মামলা এখন পর্যন্ত ৩৮ টি। সাভার আশুলিয়া , দারুসসালাম ও পল্টন থানার এসব মামলায় কয়েকবার কারাবরণও করেন। এমনকি ২০১৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রায়েরবাজার থেকে ডিবি পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়। ৩ দিন নিখোঁজ থাকা জাকিরকে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ডিবি মিডিয়া সেন্টারে হাজির করা হয়। এবারের নির্বাচনে দলের জন্য এই ত্যাগী নেতাকে কাউন্সিলররা মূল্যায়ন করতে চায় জানা গেছে। একাধিক কাউন্সিলর জানায়, জাকিরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চাই। তিনি নির্বাচিত হলে সিন্ডিকেট মুক্ত হবে কমিটি।
জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির বলেন, ২৭ বছর পর ছাত্রদলের কাউন্সিল যে প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা সত্যিই কঠিন। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন – নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ছাত্রদলের সারাদেশের সবকটি ইউনিট যোগ্য নেতৃত্বে মাধ্যমে শক্তিশালী করতে হবে।
ছাত্রদলকে ক্যাম্পাস মুখি করার কথা উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে শক্তিশালী করতে হবে। সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ইউনিটগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মী তৈরি করতে হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপির অবদান তুলে ধরতে হবে।
জাকিরুল ইসলাম জাকির আরও বলেন, সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে স্বতন্ত্র কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে ছাত্রদল।
তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন জেলা সফর করছি। সারা দেশের ১১৭টি ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলরদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে অনেকের সাথে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। তাদের মনে আমাকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা। আমি নির্বাচিত হলে,তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করবো।