অবৈধ ক্যাসিনো, জুয়া, চাঁদাবাজি সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ভাগ্যে কী রয়েছে; সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর)।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে দল ও সরকারের উচ্চ পর্যায় সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে যতগুলো ক্যাসিনো বন্ধ করা হয়েছে তার একটিরও মালিকানায় সম্রাটের সম্পৃক্তা পাওয়া যায়নি। আবার ক্লাবগুলোর দায়িত্বশীল কোনো পদেও তার নাম পাওয়া যায়নি। সুনিদিষ্ট কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে ক্যাসিনো জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয় তখনই নাম উঠে আসে সম্রাটের। সম্রাটের অধীনস্থ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ ভূঁইয়া গ্রেফতার হওয়ার পরই আলোচনায় আসে সম্রাটের গ্রেফতারের প্রসঙ্গ।
ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৭ টি মামলা হয়েছে। মাদক, অস্ত্র ও মানি লন্ডারিং আইনে হওয়া এসব মামলা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এগুলোর প্রায় প্রতি ঘটনার সঙ্গে যুবলীগের আলোচিত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোনো মামলাতেই তাকে আসামি করা হয়নি। এ ছাড়া সম্রাটোর বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসা, বিদেশে অর্থ পাচারসহ আটটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া গেছে। তবু এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। সে যেন বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
কয়েকদিন আগে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্ণেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সম্রাটের ব্যাপারে সুনিদিষ্ঠ কোনো তথ্য নেই, আবার তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারেও বাধা নেই। তার বিষয়ে তথ্য পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
রাজধানীর কাকরাইলের ভুঁইয়া ম্যানসনে আলোচিত এই যুবলীগ নেতার কার্যালয়। সেখানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ক্লাবগুলোতে অভিযানের আগে সেখানে প্রায় সময়ই নেতাকর্মীদের ব্যাপক অবস্থান থাকতো। কিন্তু কয়েকদিন ধরে সম্রাটকে আটকের গুঞ্জন চাউর হলে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে ওই ম্যানশন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক নেতা জানান, ‘সম্রাট গুরুত্বর অসুস্থ্য। তার হার্টের সমস্যা বেড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তার সিঙ্গাপুর যেতে হবে। কিন্তু নেত্রীর অপেক্ষায় আছেন। নেত্রীর সঙ্গে কথা বলেই তিনি চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
‘যেকোন সময়ে সম্রাট গ্রেফতার হতে পারে-এমন গুঞ্জনও আছে’- এমন প্রশ্নের জবাবে মহানগর যুবলীগের নেতারা বলেন, ‘কাউকে আটক করতে হলে সুনিদিষ্ট অভিযোগ থাকতে হয়। তিনি তো ক্যাসিনোর মালিকও না, কোন ক্লাবের সভাপতি বা পরিচালকও না।’