তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির আবদার হচ্ছে রাষ্ট্র যেন দুর্নীতির সাথে আপোষ করে। এটি সম্ভবপর নয়।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ফিনলে স্কয়ারে সিনেপ্লেক্সে ‘সিলভার স্ক্রিন’ আয়োজিত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসময় আরো বলেন, জিয়ার মুক্তির বিষয়টি একেবারেই আদালতের এখতিয়ার। রাষ্ট্রপক্ষের জামিনের বিরোধিতা না করে তাদের আবদার পূরণের কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, দুর্নীতির মামলায় কেউ জামিন চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কাজ হচ্ছে জামিনের বিরোধিতা করা। জামিনের যদি বিরোধিতা করা না হয় তাহলে সেখানে তো দুর্নীতির সাথে রাষ্ট্রের আপোষ করা হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে, দুর্নীতির দায়ে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি যখন জামিন চাইবেন, তখন তার বিরোধিতা করা। এটা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বা দুদকের আইনজীবীর দায়িত্ব।
কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান বাদলের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন এমপি, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. ম রমিজ উদ্দিন, আরটিভি’র সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী, দৈনিক প্রথম আলো চট্টগ্রাম অফিসের বার্তা সম্পাদক কবি ওমর কায়সার প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করলেও আদালত নানা বিবেচনায় যে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে। সেটি হচ্ছে আদালতের এখতিয়ার। এখন বিএনপির নেতারা একেক সময় একেক কথা বলেন। তারা আসলে কী চায় ? তারা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে, কারাগারে থাকা নিয়ে রাজনীতি করতে চান নাকি খালেদা জিয়াকে সত্যিকার অর্থে আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্ত করতে চান প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা একবার বলে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করা হবে, কোন করুণা তারা চায় না। আবার বলে রাষ্ট্রপক্ষ যেন বিরোধিতা না করে। আবার বলে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত একজন আসামি। এতিমের জন্য, এতিমখানা নির্মাণের জন্য যে টাকা এসেছিল। এতিমখানা নির্মাণ না করে তিনি সেই টাকা নিজের ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে ফেলেছেন। সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে, দলিল দস্তাবেজ, সওয়াল-জওয়াবের মাধ্যমে তার শাস্তি হয়েছে।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে বলেন, চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, চলচ্চিত্রকে সমাজের দর্পণ হিসেবে জানে, চলচ্চিত্র সমাজকে দিক নির্দেশনা দেয়। মানুষকে কাঁদায়-হাসায়। নতুন প্রজন্ম চলচ্চিত্র দেখেনা। তিন ঘন্টা সিনেমা দেখার মতো ধৈর্য্য তাদের নেই।
তিনি বলেন, প্রতিটি সিনেমার মধ্যে যদি সমাজের জন্য একটি বার্তা থাকা দরকার। সমাজের যে অসঙ্গতি আছে। মানুষ যে যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে সাথে যন্ত্র হয়ে যাচ্ছে এবং পশ্চিামাদের যে অন্ধ অনুকরণ হচ্ছে এতে সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অথচ সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের দিক দিয়ে আমরা পশ্চিমাদের চেয়ে অনেক বেশি ধনী ও সমৃদ্ধ এগুলোকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। আমাদের কাছ থেকে পশ্চিমারা শেখার কথা, সেটি না হয়ে উল্টো হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলোকে যদি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায় সমাজকে বার্তা দেয়া যায় তাহলে মানুষকে যন্ত্র হওয়া থেকে বিরত রাখা যায়, মানুষের আবেগ ও অনুভুতি যাতে থাকে, জড় পদার্থ হয়ে না যায় সেখানে চলচ্চিত্র বিরাট একটা ভুমিকা রাখতে পারে। সব চলচ্চিত্রে যদি এধরণের বার্তা থাকে সেটি সমাজ নির্মাণে এবং সমাজের মূল্যবোধ সংরক্ষণে এবং সমাজকে মানবিক হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে