‘খড়কুটো আঁকড়ে ধরা ঐক্যফ্রন্ট জনগণের সাড়া পাচ্ছে না’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘তারা (ঐক্যফ্রন্ট) যে সমাবেশ করতে যাচ্ছেন, বিভিন্ন যায়গা মানববন্ধন করতে যাচ্ছেন এই জন্য তাদেরকে অভিনন্দন। কারণ, আমরা চাই রাজপথে এবং সংসদ শক্তিশালী বিরোধী দল থাকুক। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে, তারা এই সমস্ত সভা সমাবেশ করে জনগণের কোনো সাড়া পাচ্ছে না এবং কোনো ইস্যুও খুঁজে পাচ্ছে না। ছাত্র এবং অন্যান্য ইস্যু নিয়ে খড়কুটো আঁকড়ে ধরে তারা রাজনীতির মাঠে সরগরম থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণের কোনো সাড়া না পেলেও তারা যে মাঠে নামার চেষ্টা করছে এইজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ।’
রোববার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে নবনির্মিত তথ্য ভবন মিলনায়তনে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর আয়োজিত সরকারি প্রচার কার্যক্রমে উদ্ভাবন ও সেবা সহজীকরণ বিষয়ে জেলা তথ্য অফিসারদের কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: মুরাদ হাসান ও তথ্যসচিব আবদুল মালেক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
‘সরকারের দেশ পরিচালনার নৈতিক অধিকার নেই’-বিএনপি’র এহেন মন্তব্যের প্রতি তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আজকে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে পরপর তিন তিনবার আমরা নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করার দায়িত্ব পালনের সুয়োগ পেয়েছি। বিএনপি তো ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই বলে আসছে দেশ পরিচালনায় সরকারের কোনো নৈতিক অধিকার নেই। বিএনপির এটি কোনো নতুন কথা নয়, এটি পুরনো বুলি। পুরনো ঢোলই তারা বাজাচ্ছে, এই ঢোল আমরা গত ১১ বছর থেকে শুনে আসছি।’
সাংবাদিকরা এসময় এমপি রাশেদ খান মেননের ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘কয়েকটি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আমিও বিষয়টি দেখেছি, তবে বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যারা ক্যাসিনো পরিচালনা করতো তাদেরকেই ধরা হয়েছে। সবাই দুর্নীতিবাজ। ক্যাসিনো অবৈধ। বড় বড় যারা রাঘব-বোয়ালকেই ধরা হয়েছে। এখন আরো অনেকের নাম আসছে। যারা অভিযোগগুলো করছেন, বড় বড় কথা বলছেন, তাদের নামও আসছে। এটি চলমান আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশকে পরিশুদ্ধ করার জন্য, দেশ থেকে সব ধরণের অনিয়ম দূর করার জন্য সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ধীরে ধীরে দায়ী সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জেলা তথ্য অফিসারদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে সরকারের সাথে জনগণের সেতুবন্ধ রচনা করা এবং দেশ ও জাতির প্রয়োজনে একটি ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজকে উদ্বুদ্ধ করা। সেই লক্ষ্যেই গণযোগাযোগ অধিদপ্তর দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। গত দশ বছরে প্রচার প্রচারণার ক্যানভাস অনেক পরিবতির্ত হয়ে গেছে। সময় এসেছে পুরনো ধাঁচের প্রচার কার্যক্রম বদলে ফেলে আধুনিক যুগোপযোগী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সাথে নিয়ে সমন্বিত প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করার।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্য, একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি উন্নত জাতি গঠন করা, উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নত জাতি গঠন করা সম্ভব নয়। উন্নত জাতি গঠন করার জন্য সমাজকে উন্নত করতে হবে। প্রচার প্রচারণার অংশ হিসেবে জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে মূল্যবোধ, মানবিকতা ও দেশপ্রেমের বার্তা।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: মুরাদ হাসান তার বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সকলকে একাগ্রভাবে কাজ করতে হবে। তথ্য মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে পুর্ণ সহযোগিতা দিতে সদা প্রস্তুত।’
তথ্যসচিব আবদুল মালেক বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হিসেবে নিজের কাজকে শুধু চাকুরি না ভেবে দেশ ও মানুষের কল্যাণে ব্রতী হয়ে কাজ করতে হবে। তবেই দেশ এগিয়ে যাবে।’
গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও দেশব্যাপী ৬৮টি তথ্য অফিসের প্রতিনিধিবৃন্দ কর্মশালায় যোগ দেন।