গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করে কেউ সফল হবে না। রাজনৈতিক দূরদর্শিতাসম্পন্ন, লোভ-লালসামুক্ত অবস্থান নিয়ে থাকা সারা বিশ্বের সৎ এবং শ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এদেশে কোন লাভ হবে না। কেউ যদি ওয়ান ইলেভেনের মতো অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চান, তাদের দুঃস্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যাবে।”
বুধবার (২৩ অক্টোবর ২০১৯) রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব বসতি দিবস ২০১৯ উপলক্ষ্যে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স, বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স, বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার। সেমিনারে কী নোট পেপার উপস্থাপন করেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ)-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুল মতিন ও বিজনেস ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-এর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ গোলাম সুলতান আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুর রহমান।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, “তলাবিহীন ঝুঁড়ির বাংলাদেশকে এত উন্নত জায়গায় নিয়ে এসেছেন শেখ হাসিনা, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি যারা করেন না তারাও বিস্ময় প্রকাশ করেন। কিন্তু ক্ষমতালিপ্সু কয়েকজন কখনো প্রেসক্লাবের সামনে, কখনো পল্টনে নানা রকম উদ্ভট কথা বলছেন। রাজনীতির অন্ধ গলিতে গিয়ে উদ্ভ্রান্ত হওয়া মানুষগুলো প্রলাপ বকলে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে না”।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ভূমিকা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “অপানাদের দক্ষতা, কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও একাগ্রতা অত্যন্ত সময়োপযোগী। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথচলায় আপনারা গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধা। যে যেখানে আছি, সে জায়গা থেকে কাজ করে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, ত্রিশ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন, দুই লক্ষ মা-বোনের স্বপ্ন ধ্বংস হতে পারে না। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অনৈতিকতা এগুলো কোনভাবে বরদাশত করা হবে না। দুর্নীতিকে কোনভাবে আমরা প্রশ্রয় দিতে চাই না। স্বচ্ছ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই।”
শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক শত্রুরাও বলবে বাংলাদেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। সে উন্নয়নকে নৈতিকতার জায়গায়ও ধারণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান কোন রাজনৈতিক সরকার নিতে পারে, তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন। তিনি দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন, যে দলেরই হোন, দুর্নীতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি। অপরাধীর দাম্ভিকতা শেখ হাসিনা চূর্ণ করে দিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ঘোষিত কর্মসূচির বাস্তবায়ন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে”।
প্রধান অতিথি যোগ করেন, “বাংলাদেশকে পরিবেশসম্মত, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করা আমাদের লক্ষ্য। পরিবেশ রক্ষা করতে না পারলে আমাদের সকল উন্নয়ন অর্থহীন হয়ে যাবে। এ জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। শহরের সকল নাগরিক সুবিধা গ্রামের প্রত্যেক মানুষের কাছে আমরা পৌঁছে দিতে চাই। আমরা গ্রামে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে যাবো, রাস্তা উন্নত হবে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস পৌঁছে দেবো। যাতে মানুষ শহরমুখী না হয়। প্রশাসনকে বিকেন্দ্রীকরণ করে নাগরিক সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেয়ার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে”।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, “সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাউজিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি করতে গণমাধ্যমকেও ভূমিকা রাখতে হবে”।