তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশের জনগণের মাঝে সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ বেতারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের সামাজিক, মানবিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ রক্ষায় রেডিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
মঙ্গলবার ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তিন দিনব্যাপি এবিইউ রেডিও এশিয়া সম্মেলন এবং রেডিও সং ফ্যাস্টিভালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সহযোগিতায় এশিয়া প্যাসেফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (এবিইউ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ৩ দিনের সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিভিন্ন দেশের মোট ৬৩ প্রতিনিধি এই রেডিও মিট-এ যোগ দিয়েছেন। ঢাকায় এ ধরনের সম্মেলন এটাই প্রথম।
তথ্য সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, এবিইউ মহাসচিব ড. জাভেদ মোত্তাগী ও বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র ও দুর্নীতিমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রেডিওর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধকালে বাঙালী জাতীয়তাবাদী বাহিনীর রেডিও সম্প্রচার কেন্দ্র ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। এই বেতার কেন্দ্র স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সম্প্রচার করার পাশাপাশি দেশের মাটিতে যুদ্ধে অংশ নিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বেতার এখন বিভিন্ন উন্নয়ন ও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু জাতির প্রতিষ্ঠাতা তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগিয়ে চলছে।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ১৬ কোটিরও বেশি জনবহুল একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালের আগে মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৬শ’ মার্কিন ডলার। বর্তমানে তা ২ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশ সকল সূচকে পাকিস্তানকে এবং এমন কি অনেক সামাজিক সূচকে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর কোন স্বপ্ন নয়, এটা এখন দৃশ্যমান।