উপাচার্যের দুর্নীতির অভিযোগে চলমান আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বনানীর সেতু ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী।
কাদের বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আছে, এর সর্বশেষ খবর প্রধানমন্ত্রী জানেন। কোনো ব্যবস্থা নিতে হলে তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে নেবেন। সরকার প্রধান এ ব্যাপারে খুব সজাগ। তিনি বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করছেন, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন।’
উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সিন্ডিকেটের জরুরি বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ও সিন্ডিকেট সচিব রহিমা কানিজ আমাদের সময় অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে ৯ দিন পর আজ দুপুরে নিজ কার্যালয়ে যান জাবি উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলাম। উপচার্যপন্থীরা তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে এক জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পরপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ছাত্রলীগের এই হামলায় তিন সাংবাদিক ও শিক্ষকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। যাদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীদের এই মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। সেখানে তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা ধরনের শ্লোগান দেন।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি করেছেন। উন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি দিয়েছেন। তার স্বামী ও ছেলেও এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে জাবি ছাত্রলীগের নেতারা সরাসরি অভিযোগ করেছেন। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্য। এর পর থেকে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। এই আন্দোলন প্রায় মাসব্যাপী চলছে।