নিজ দল থেকে শুরু করা ‘শুদ্ধি অভিযান’ সমাজের সকল স্তরের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বিস্তৃত করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘অন্য দলেরও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে, কারা দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। খোঁজখবর নেয়া হবে প্রশাসনে কারা দুর্নীতিবাজ। সব সেক্টরে খারাপ লোকদের খুঁজে বের করা হবে।’
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে কর্মী-সমর্থকের অভাব নেই। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের পার্টিতে দূষিত রক্ত আর চাই না। দূষিত রক্ত বের করে দিয়ে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। আমরা চাইবো ক্লিন ইমেজের কর্মীদের নেতা বানাতে। খারাপ লোকের কোনও দরকার নেই। খারাপ লোকেরা দলের দুর্নাম ডেকে আনে। দলের দুঃসময় আসলে এই খারাপ লোকদেরকে বাতি জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের ত্যাগ আছে ক্লিন ইমেজ আছে, দক্ষিণের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সেসব ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলনেও যাদের ক্লিন ইমেজ আছে তাদের দিয়ে নয়া নেতৃত্ব তৈরি করা হবে।’
এসময় সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা মাদককে না বলি। দুর্নীতিকে না বলুন, সন্ত্রাসকে না বলুন, টেন্ডার-চাঁদাবাজিকে না বলুন, ভূমি দখলকে অন্যের বাড়ি দখলকে না বলুন।’
‘জননেত্রী শেখ হাসিনর পক্ষ থেকে পরিষ্কার বার্তা নেতাদের কাছে কর্মীদের কাছে দিয়ে গেলাম’- যোগ করেন কাদের।
দলে কোনও ‘বসন্তের কোকিল’ প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চাঁদাবাজ-মাদক ব্যবসায়ী-দুনীতিবাজ-লুটেরারা- সন্ত্রাস-দুর্নীতিবাজরা সাবধান। এদের জায়গা নেই শেখ হাসিনার স্বেচ্ছাসেবক লীগে। মনে রাখবেন ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না কেউ। বসন্তের কোকিলদের এনে দল ভারি করার চেষ্টা করবেন না। দুঃসময়ের কর্মী চাই, বসন্তের কোকিল চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রীর সোনালী অর্জন কারও খারাপ আচরণে যেন ম্লান হয়ে না যায়। দশটা ভালো কাজকে একটা খারাপ ব্যবহার ঢেকে দিতে পারে। শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়ে গেছে, শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। সৎ সাহস আছে বঙ্গবন্ধু কন্যার, তিনি নিজের ঘর থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। কেউ ছাড় পাবে না।’
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ ফ ম বাহউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘সুষ্ঠু ধারার ইতিবাচক রাজনীতি ফেরাতে চান শেখ হাসিনা। তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চান। সৎ পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ দেখতে চান। বিতর্কিতদের দেখতে চান না। মানুষ দুর্নীতিমুক্ত উন্নয়ন চায়, পাশাপাশি সুশাসন চায়।’
যেকোনও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক।
আজ বিকেল চারটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় পর্বের কাউন্সিলে প্রার্থিতার আহ্বান এবং কাউন্সিলরদের মতাতম নেয়া হবে। আর কমিটির নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলনের সঙ্গে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহ, সদস্য সচিব গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান প্রমুখ।