প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী নূর হোসেনকে কটাক্ষ করলে জনগণ ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কেউ বিষাক্ত কটূক্তি করে সীমালঙ্ঘন করবেন না। একবার মুখ ফসকে গেলে যতই “সরি” বলুন, কাজে আসবে না।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে (কেআইবি) ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নূর হোসেনকে হত্যার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা কারা করেছিল, সেটা জাতি জানে। সেই নূর হোসেনকে অশ্রাব্য ভাষায় কটাক্ষ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদালতে অক্সিজেন নিয়ে যারা রাজনীতিতে অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে, তারা আজ নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) কটাক্ষ করে। কথা মুখ থেকে একবার ফসকে গেলে মুখে আর ফিরে আসে না, যত “সরি” বলুন না কেন। এ ধরনের মন্তব্য, কটাক্ষ আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশকে নষ্ট করছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতি নন, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি বহু বছর ধরে এ দেশের জনপ্রিয় নেতা। এ দেশের গণতন্ত্র বিকাশের অগ্রদূত। এ দেশের মানুষ তাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। তাকে কটাক্ষ করলে বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করা হবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।’
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘এখনো বলা হয়, “মুজিব গেছে যেই পথে, হাসিনা যাবে সেই পথে।” এই রকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য বিএনপি দিয়ে যাচ্ছে। আমি বলে দিতে চাই, আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি, আর নয়।’
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের নিয়ম তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে যে কজনের নামই আসুক না কেন, সমঝোতার মাধ্যমে একজন করে নাম আমাদের দিতে হবে। তা না হলে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তাই মেনে নিতে হবে।’
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মো. মোবাশ্বের চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সম্মেলন উদ্বোধন করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহ।
প্রসঙ্গত, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে পুলিশের গুলিতে শহীদ নূর হোসেনকে ‘ইয়াবাখোর’ ও ‘ফেনসিডিলখোর’ বলেছিলেন জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। গত রোববার গণতন্ত্র দিবসের এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করার পর রাঙ্গার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর গতকাল বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে ক্ষমা চান তিনি।