২০২১ সালের মধ্যে দেশের সব ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিশেষায়িত বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে তিনি একথা জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ এর মার্চ মুজিব বর্ষ। এরই মধ্যে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করবো। যেখানে গ্রিডলাইন পৌঁছেনি, সেখানে সোলার বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত করব। কেউ অন্ধকারে থাকবে না, সব ঘরে আলো জ্বলবে।’
পাহাড়, হাওর, চর ও প্রত্যন্ত এলাকায় সবার ঘরে বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, তার থেকে অনেক কম খরচে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দেয়। ওই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুতের অপচয় যেন না হয়, সেদিকে সবাইকে লক্ষ রাখতে হবে। সেই অনুরোধটা আমি সবার কাছে জানাচ্ছি।’
উন্নয়ন সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার পূনর্ব্যাক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন করে যাচ্ছি। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছেন। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ যাতে উন্নয়নের ফল পায় সে লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। উন্নয়ন মানে শুধু শহরের মানুষের উন্নয়ন না। গ্রামের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের উন্নয়ন আমরা নিশ্চিত করতে চাই। যাতে তাদের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, খাদ্য, শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা যায়।’
আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের চাষযোগ্য জমি সংরক্ষণ করতে হবে। কারও কাছে ভিক্ষা বা হাত পেতে চলতে চাই না।’
কার্যক্রম উদ্বোধনের পর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হলো- আনোয়ারা ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, রংপুরে ১১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলীতে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিকলবাহা ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, পটিয়া ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেঁতুলিয়া ৮ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গাজীপুর ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এ ছাড়া শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতাধীন ২৩ উপজেলা হলো- বগুড়ার গাবতলী, শেরপুর, শিবগঞ্জ, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, ফরিদপুরের মধুখালী, নগরকান্দা, সালথা, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, পলাশবাড়ী, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর, নবীগঞ্জ, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, মহেশপুর, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, নাটোরের বড়াইগ্রাম, লালপুর, সিংড়া, নেত্রকোনার বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ এবং পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী।