সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপের লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
এর আগে সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত হলে জনগণ করতালির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্গচাষী ঋণ পেতো বিনা জামানতে। আমরাই তাদের ঋণ দিতে শুরু করি। সহজেই কৃষি সরঞ্জাম পেতে কৃষকদের কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি।’
বহুমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমে মানুষের জীবন মান উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় ক্ষুদ্রঋণ আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম দারিদ্র্য বিমোচন হবে। পরে দেখলাম দারিদ্র্য বিমোচন না হয়ে দারিদ্র্য লালন পালন করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গৃহহীনদের ঘর দেওয়া পদক্ষেপ নিয়েছিলাম ,তারপর তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। গৃহহারাদের ঘরবাড়ি করে দেওয়ার কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছি। প্রতিটি পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’
এ সময় প্রত্যেক পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষকদের যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা করি। পাশাপাশি শিল্পায়নের দিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেই। এবং এই শিল্পায়ন যাতে সারা বাংলাদেশে হয় এবং কৃষি জমিও যেন আমাদের রক্ষা পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছি।’
এখন ভূমি ব্যবহারের জন্য একটা নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই নীতিমালা যাতে যথাযথভাবে কার্যকর হয় সে পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। কেউ যাতে তিন ফসলি ও দুই ফসলি জমি নষ্ট না করে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ আমাদের দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা যা আমরা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারও কাছে হাত পেতে আমরা চলতে চাই না। জাতির পিতা একটা কথা বলতেন, ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না। আমরা ভিক্ষুক জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাই না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি।’
উর্বর মাটি ও মানুষ দিয়ে জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ গড়ার নীতি অনুসরণ করে চলছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে পারি সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। দেশবাসী এর সুফল পাচ্ছে।’
জানা গেছে, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের উৎপাদিত পণ্যপ্রদর্শনী ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল এ মেলায় স্থান পাবে।