আগামী দশ দিনের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ বাজারে ওঠা শুরু হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির আশা, এর পর থেকে বাজার ‘সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসবে’। এ ছাড়া ২৯ তারিখের মধ্যে কম করে হলেও ১২ হাজার টন পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তার আশার কথাগুলো জানান মন্ত্রী। সেমিনারে পেঁয়াজের দাম কমার পর আবারও বাড়া, দাম কেন কমছে না, সংকট ও সংবাদমাধ্যমের বিষয়ে কথা বলেন টিপু মুনশি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম কমে এলেও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আবার দাম কিছুটা বেড়েছে। গত চার দিন ধরে ট্রান্সপোর্টের একটা সমস্যা হচ্ছে, ট্রাক পাচ্ছে না। এটাও একটা কারণ। এখন এই খবরটা দেওয়া দরকার যে, আর কয়েকটা দিনের মধ্যে ইম্প্রুভ করবে। পেঁয়াজের দাম ওইভাবে নিয়ন্ত্রণে আসছে না, শুক্রবার আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। শুক্রবার উত্তরার বাজার থেকে আমি নিজে কিনেছি ১৪০ টাকা করে দেশি পেঁয়াজটা। এটা তো বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘পেঁয়াজের ব্যপারে প্রথম কথা হল, এটা দুইশ টাকার উপরে উঠেছিল। আপনারা জানেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এমনকি এয়ারে (বিমানে) করে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন দামটা নেমে এসেছে। এখন মিশর বা টার্কি থেকে যেটা আসছে সেটা ১২০ টাকা। আর আমাদের দেশি পেঁয়াজটা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো একজন মানুষ কোথাও থেকে ২০০ বা ১৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কেনার কথা বলে তাহলে সেটা অবশ্যই নিউজ হতে পারে না। আপনাদের কোনো একটা চ্যানেলে একটা নিউজ আসছে। সেখানে এক রিকশাওয়ালা বলছে যে, আমি ৫০০ টাকা রোজগার করি ২০০ টাকা দিয়ে যদি আমি পেঁয়াজ কিনি তাহলে তো আমার ৩০০ টাকা হাতে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে বাস্তবতা হল একজন মানুষ আমাদের দেশে পরিসংখ্যান বলে, একজন মানুষ ৩৫ গ্রাম পেঁয়াজ খায়। সেই রিকশাওয়ালার পরিবার যদি চারজনের পরিবার হয় তাহলে তার লাগে ১৪০ গ্রাম। ২০০ টাকা কেজি করে ধরলেও ১৪০ গ্রামের দাম ৩০ টাকার বেশি না। কিন্তু কথাটা এভাবে বলা হয়েছে, আমি ২০০ টাকা দিয়ে এক কেজি পেঁয়াজ কিনলে পরে ৩০০ টাকা দিয়ে আমার সংসার চলবে কীভাবে? দ্যাট ইজ নট রিয়েলিটি।’
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আরও বলেন, ‘আমাদের ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এই ২৫ শতাংশের ৯০ ভাগ আসে ভারত থেকে। ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বরে প্রতিমাসে আমাদের ১ লাখ টন করে আমদানি হত। সেখানে সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৫ হাজার টন, ৭৫ হাজার টন ঘাটতি থাকল। অক্টোবরে ২৪ হাজার টন এসেছে, সেখানেও ৭৬ হাজার টন ঘাটতি। এখন আমাদের পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে।’