বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘বিনাভোটে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা দানবীয় শক্তি। যারা মানুষের ভালোবাসা নিয়ে টিকে থাকে তারাই হচ্ছে আলোক ও দিব্যশক্তি। বিএনপি ও ছাত্রদল হচ্ছে আলোক শক্তি। সুতরাং দানবীয় শক্তি টিকে থাকতে পারবে না। তাদেরকে গলায় গামছা দিয়ে রাজপথে টেনে নামাতে বাধ্য করা হবে, ইনশাআল্লাহ্।’
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদল আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান ও বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘তারেক রহমান পরিশ্রমী রাজনীতিবিদ। তিনি আগামীদিনের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। যিনি বাংলাদেশের অসহায় দরিদ্র মানুষদের স্বাবলম্বী করতে নানাবিধ কাজ করেছেন। আসলে তার রাজনীতি শুরুই হয়েছে মানবকল্যাণের মধ্য দিয়ে। যা কুচক্রী মহল ভালোভাবে নেয়নি। তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ টাটকা ডাহা মিথ্যা কথা বলে। কারণ জনগণের কাছে তাদের কোনও জবাবদিহিতা নেই। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আলো ও ন্যায়ের পথে। যারা প্রকৃত সাহসী তারাই মানবতার পক্ষে। ছাত্রদলের রক্তদান কর্মসূচি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। যারা ক্যাসিনো আর জুয়ার পক্ষে তারা তো আলোর পথে নেই।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করছি। হামলা, মামলা, গুলি উপেক্ষা করে রাজপথে পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা নেমে পড়েছে। গতকাল আপনারা রাজপথে তা দেখেছেন। আজকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবারের সন্তান জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে রাতের অন্ধকারে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী মুখে মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগই যেন মুক্তিযুদ্ধের মালিক।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রিজভী আরও বলেন, ‘দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে তো গণতন্ত্র। দেশে গণতন্ত্র থাকলে রাজপথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হবে, এটা সাংবিধানিক অধিকার। আর সেখানে মুক্তিযোদ্ধা উলফাতকে গ্রেফতার করেছেন। আসলে আপনার মনতো রাজাকার দ্বারা আচ্ছাদিত। সারাদিন রাজাকারদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তাহলে রাজাকারদের (পাকিস্তানের) পেঁয়াজ আমদানি করলেন কেন? জিয়াউর রহমান আধুনিক সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন। অথচ ৭২-৭৫ সালে সেনাবাহিনীর পায়ে রাবারের জুতা দেয়া হতো।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আজকে পুশইন করে ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে ঢুকানো হচ্ছে। কই সেখানে তো একটা কথাও বলেন না। আর বিএনপির নেতারা কোনও কথা বললে তাদের বিরুদ্ধে মামলা আর হামলা হয়।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় খেলা দেখতে গেলেন। তিনি ঘণ্টা বাজাতে গেলেন। কিন্তু তাঁকে তো কেউ প্রোটোকল দেয়নি। ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কেউ বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগতও জানায়নি। আসলে তিনি বাংলাদেশের মর্যাদার ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন। এরপরও উনার ওসব নিয়ে কোনও চিন্তা নাই। আসলে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থাটা এমন যে- ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার ক্ষমতা চাই’। মানে ‘ভেঙেছো কলসির কানা তাই বলে কি প্রেম দিবো না’।’
সংগঠনের সভাপতি এএসএম রাকিবুল ইসলাম আকাশের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লাবিদ রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তানজীম রুবাইয়াত আফিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক লিংকন ভুইয়া প্রমুখ।