দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি ও অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঐক্যফ্রন্টের স্ট্রিয়ারিং বৈঠক শেষে এমন হুঁশিয়ারির কথা জানান ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যর আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যদি কোনও কারণে এবার খালেদা জিয়ার প্রতি সুবিচার না করা হয়, অবিচার করা হয়, জামিন দেয়া না হয়, মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে যে উদ্ভূত পরিস্থিতি হতে পারে তাঁর জন্য এই সরকার সর্বতভাবে দায়ী থাকবে। এ ব্যাপারে আমরা (ঐক্যফ্রন্ট) সরকারকে সতর্ক দিচ্ছি।’
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ৬৬৪ দিন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যে মামলাত তাঁকে সাজা দেয়া হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিশেষ করে তাঁর শারিরীক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা তাঁর আশু মুক্তি দাবি করছি। আমাদের সভার আজ প্রধান দাবি এটাই। আমরা মনে করি এই দাবি মানবিক। তিনি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের দেখা করার কথা ছিলো কিন্তু তা এখনও হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আমরা ২২ তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি, উনি অত্যান্ত সরলমনে আমাদেরকে বললেন, ওনার ( খালেদা জিয়ার) আত্মীয় স্বজন পরিবারের সবাই দেখা করছে, আপনারা কেন পারবেন না। আপনারা অবশ্যই দেখা করবেন। নীতিগতভাবে উনি আমাদেরকে দেখা করার অনুমতি দিয়েই দিলো। এখন শুধু আইজি প্রিজনের কাছে দায়িত্বটা দেয়া হয়। যাতে অফিসিয়াল ফরমালিটিটা মেনটেইন করা হয়। এই পর্যন্ত আইজি প্রিজন সাহেব আমাদের কোনো সদোত্তর দিতে পারেন নাই। এ থেকে আমরা বুঝতে পারছি তাঁরা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাদের দেখা করার সুযোগ দিচ্ছে না।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে ড. মঈন খান বলেন, ‘কমনসেন্স থেকে একটা কথাই বলতে চাই, আমরা যেটা দেখি, এবং আমাদের যে অভিজ্ঞতা এ ধরনের ভুরি ভুরি মামলায় সহস্র সহস্র মামলায় জামিন দেয়া হয় আইনের ইতিহাসে। এ ধরনের মামলায় জামিন পেতে ৫ মিনিটের বেশি লাগে না।’
বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান কী থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামী ৫ তারিখের পরিস্থিতি অবলোকন করবো তাঁরপর আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জামিনের ব্যাপারে একটা তথ্য দিতে চাই। খুনের আসামি, যেখানে খুনের অপরাধে তাঁর দণ্ড। নিম্ন আদালতে ফাঁসি হয়েছে। হাইকোর্টে ফাঁসি হয়েছে, কনফারমেশন তাতে প্রায় দুই থেকে তিনমাস সময় লাগে। সেই মামলায় ফুলবেঞ্জ আসামিকে জামিন দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত জামিন বাতিল না হয় ততদিন পর্যন্ত তিনি পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারবেন। এ জাতীয় অসংখ্য উদাহরণ আইনে আছে।’
‘সেই তুলনায় খালেদা জিয়ার মামলা এটা রাজনৈতিক। তাঁকে জামিন না দেয়ার কোনও কারণ নেই। এটা আমরা বলেছি, মানবিক কারণে এবং নৈতিক কারণে সংবিধানগত অধিকারের দিক থেকে তাঁকে জামিন দেয়া উচিত।’
খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার সুযোগ অবশ্যই আছে। এতোদিনেও কেন তাঁর জামিন হচ্ছে না আমি জানি না। খালেদা জিয়ার জামিন না হলে বিচার ব্যবস্থা প্রশ্নের সম্মুখিন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের আজকে আলোচনার বিষয় ছিলো না।’