ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে জাতি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদ স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রহীন একটা অবস্থা, সংবিধানকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে তাকে উপেক্ষা করা এবং একদলীয় একটা শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করছে প্রায় এক দশক ধরে। আমরা তাদের সম্মেলনে দেখতে পেলাম সেই কথাগুলোই আবার সামনে এসেছে। ফলে জাতি সম্পূর্ণভাবে হতাশ হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতির একটা প্রত্যাশা ছিল যে, হয়তবা গণতন্ত্র উত্তরণের একটা পথ দেখা যাবে। কিন্তু তাদের (আওয়ামী লীগ) সম্মেলনে সেই পথ তারা দেখাতে পারেনি। সেইসঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক যে উন্নয়ন তার কোনটার জন্য, সংকট উত্তরণের জন্য কোনো দিকনির্দেশনা দিতে তারা এই সম্মেলনে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
কাউন্সিলে ব্যক্তি ও দলের বন্দনা করা হয়েছে, কিন্তু জাতির যে সংকট সেই সংকট উত্তরণের জন্য বেশি কিছু এই সম্মেলনে আসেনি বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের যে অবস্থান অর্থাৎ একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যাচ্ছে এবং জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা যেটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সেটা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
দলের কাউন্সিল কবে হবে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমরা একটা প্রচন্ড বৈরী ও প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে রাজনীতি করছি। আমাদের রাজনীতির যে স্পেস আমরা এখানে পাচ্ছি না। যার ফলে আমাদের যে স্বাভাবিক কার্য্ক্রম সেই স্বাভাবিক কার্য্ক্রম আমরা পরিচালনা করতে পারি না। বেশির ভাগ জায়গায় আমাদের কাউন্সিল করতে দেওয়া হয় না। বিশেষ করে জেলা ও উপজেলাগুলোতে আমাদের যে কাউন্সিল সেগুলো করতে দেওয়া হয় না।’
প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের সংগঠনকে গুছিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা দ্রুততর সময়ে এটা শেষ করবো এবং এর মধ্যেই হয়তবা আমরা কাউন্সিল করতে চেষ্টা করব।‘
রাজাকারের তালিকায় ভুল-ভ্রান্তির পেছনে বিএনপি ও জামায়াত জড়িত রয়েছে সরকারের মন্ত্রীর এরকম বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফখরুল বলেন, ‘সব ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়টা পুরোনো বিষয়। এটা নতুন না। এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। সেইভাবে সবসময় তাদের ব্যর্থতা, তাদের অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে।’
এর আগে দলের সদ্য প্রয়াত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবির মুরাদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদের পরিচালনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মরহুমের জীবন-কর্ম তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
মিলাদ মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, উলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল কালাম আজাদসহ নেতাকর্মীরা অংশ নেন।