নিয়মিত সম্মেলন না হলে কমিটি ভাঙার হুঁশিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর

সম্মেলন নিয়মিত না হলে কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ তম জাতীয় সম্মেলনে নবমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘তৃণমূলে যেসব জেলা-উপজেলায় এখনো সম্মেলন হয়নি, সেগুলোতে দ্রুত সম্মেলনের আয়োজন করতে হবে। এখন থেকে যেসব ইউনিটে নিয়মিত সম্মেলন হবে না, সেসব কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হবে। কারণ, নিয়মিত সম্মেলনগুলো করে দলকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব জেলা-উপজেলায় নতুন কমিটি হয়েছে সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি খুব শীঘ্রই করতে হবে। সহযোগী সংগঠনগুলোরও দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

৯ম বারের মত আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা গণভবনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ২১তম জাতীয় সম্মেলন সফল করতে যারা নিরলশ পরিশ্রম করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের এমন কিছু করা যাবে না, যাতে আমাদের দলের বদনাম হয়; সরকারের বদনাম হয়; দেশের বদনাম হয়। আমরা সারা দেশে প্রচুর উন্নয়ন করছি। এই উন্নয়ন কাজগুলো যেন সঠিকভাবে হয় সেগুলো খেয়াল রাখতে। কারণ, মানুষ উন্নয়নের সুফলটা যেন পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

চলমান শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘মাদক সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযানটা চালাচ্ছি এটা অব্যাহত রাখতে হবে। এ বিষয়ে কোনো আপস নয়। মানুষের মধ্যে আস্থা অর্জন করাতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একটা দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে সাংগঠনিকভাবে সেই দল কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। মানুষ সে দলের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখতে পেরেছি। আর শক্তিশালী সংগঠন হলে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়। আমরা সেটা করতে পারি। এটা আগামী তো অব্যাহত রাখতে হবে।’

এ সময় দলের নেতাকর্মীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা দুটি বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়ার আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আগামীতে যেসব লেখা প্রকাশ হবে সেগুলো পড়তে বলেন তিনি।

আগামীতে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করার কথা জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুড়ো হয়ে গেছি। ৭৩ বছর বয়স। বয়স তো আর কম না। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে গেছে। ৮১ সালে আসছি। তখন মাত্র ৩৪ বছর বয়স। সে সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়েছি। আর এখন ৭৩ বছর বয়স। কাজেই সেটা মাথায় রেখে আগামী দিনে নতুন নেতৃত্ব আপনারা গড়ে তুলবেন সেটাই আমি চাই।’

এর আগে নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে গণভবনে আসেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ সহ হুইপগণ।