ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, হামলাকারীদের দলীয় পরিচয় থাকলেও শাস্তির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমিতো বলেছি, যে পরিচয়ই হোক অপকর্মকারীকে আমরা অপকর্মকারী হিসেবেই দেখবো। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখবো, দুর্বৃত্তকে দুর্বৃত্ত হিসেবেই দেখবো। এখানে কোনো ছাড় দেওয়ার বিষয় নেই।’
এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বিব্রতকর একটা অবস্থার সৃষ্টি হয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো ঘটনায় সরকার নির্বিকার থাকেনি। সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে।’
হামলাকারীদের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। তারা তো সরাসরি আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত নয়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চেরও কেউ কেউ জড়িত এটা রিপোর্টে এসেছে। আগে ছাত্রলীগ করতে পারে। এর মধ্যে একজনের কথা আমি শুনেছি, তাকে ছাত্রলীগ থেকে আগেই বহিষ্কার করেছে তার অপকর্মের জন্য। বিতর্কিত বলে অনেক আগেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রলীগ থেকে সে বহিষ্কৃত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বহিষ্কৃত হয়ে গেলে বা দল থেকে চলে গেলে…সবাই ছাত্রলীগ করে পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগই করবে এমন কোনো বিষয় নয়। ছাত্রলীগ করে অন্য দলেও কেউ কেউ চলে গেছে।’
এমন নিন্দনীয় ঘটনা যারা ঘটায় তাদের অবশ্যই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার খুব সিরিয়াসলি দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী। এ সময় বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
উল্লেখ্য, রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হককে তার কক্ষে ঢুকে আলো নিভিয়ে পেটান মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। এই মঞ্চের অনেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ সময় নুরুলের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্তত ৩০ জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাদের মধ্যে গতকাল রাত পর্যন্ত ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই দফায় নুরুল হক ও তার সহযোগীদের রড, লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়। প্রথম দফায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা ডাকসু ভবনে ঢুকে তাদের পেটান। এরপর ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক (ডাকসুর এজিএস) সাদ্দাম হুসাইন ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফায় হামলা ও মারধর করা হয়। এ সময় ডাকসু ভবনেও ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী।