ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাস্তা নির্ধারণ করে সড়কগুলোর জন্য তথ্য ভাণ্ডার সৃষ্টি করব। সেই তথ্য ভাণ্ডার অনুযায়ী একদিকে ফুটপাত দখলমুক্ত করব, অন্যদিকে হকারদের পুনর্বাসন করব।’
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট বাটার মোড় সংলগ্ন এলাকায় ১১তম দিনে নির্বাচনি প্রচারণায় নেমে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তাপস বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে একটি মহাপরিকল্পনার আওতায় ঢাকাকে পরিষ্কার,পরিচ্ছন্ন এবং সচল হিসেবে গড়ে তুলব। সেখানে রাস্তা হোক আর ফুটপাত হোক যেগুলো অবমুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেব। তবে সেটা পর্যায়ক্রমে (কেন না যারা হকারি করেন তারা কিন্তু শোষিত। আমরা লক্ষ্য করি বিভিন্নভাবে তাদের শোষণ করা হয়।) আমরা তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে পুণর্বাসনের ব্যবস্থা নেব। এর আগে পুনর্বাসনের অনেক কথা বলা হয়েছিল। কিন্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ব্যাপক স্বতফূর্ত সাড়া পাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, ঢাকবাসী আমাদের এই প্রাচ্যের ঢাকাকে ভালবাসে। তারা আরও উন্নত ঢাকা চাই। সে প্রেক্ষিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারির সিটি নির্বাচনে ঢাকাবাসী এই সুযোগটা নেবে। নব সূচনা গড়ার লক্ষ্যে, উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে ভোটকেন্দ্রে সকালে উপস্থিত হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের সেবককে নির্বাচিত করবে। একই সঙ্গে তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে।’
তাপস আরও বলেন, ‘ঢাকাবাসীর জন্য এরই মধ্যে আমরা আমাদের উন্নয়নের রূপরেখা দিয়েছি। সেটা আমি বিশ্বাস করি ঢাকাবাসী সেটা সাদরে গ্রহন করেছে। এভাবে উন্নয়নের রূপরেখা কেউই এই নির্বাচনেও দেয়নি। এর আগেও কেউ দেয়নি। আমরা সুনির্দিষ্ট রূপরেখার আওতায় উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে বিস্তারিত আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রকাশ করব। আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারের কার্যক্রম চলছে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সেটার ওপর কাজ করছে। আমরা আশা করছি আরও দুএকদিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ইশতেহার ঢাকাবাসীর কাছে প্রকাশ করতে পারব।’
ইভিএম নিয়ে বিএনপি আপত্তি তুলছে এ বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনটাকে তথা ঢাকাবাসীর উন্নয়নের জন্য নয়, ঢাকাবাসীর কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য নয়, ঢাকাবাসীর কষ্ট লাঘবের জন্য নয়, ঢাকাবাসীকে একটি উন্নত ঢাকা উপহার দেওয়ার জন্য নয়। বরং তারা বারবার বলছে, এটা তাদের আন্দোলনের একটি অংশ। একই সঙ্গে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করার আন্দোলনের একটি অংশ হিসেবে দেখছেন। সুতরাং আমি মনে করি না ঢাকাবাসী সেটাকে গ্রহণ করবে। এখন নতুন করে তারা আবার ইভিএম-এর ব্যাপারে বলছে। ঢাকাবাসী তাদের কথা গ্রহণ করেনি। তাই আমি মনে করি, আধুনিক প্রযুক্তি সবাই সাদরে গ্রহণ করেছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকাবাসী তাদের সেবক নির্বাচিত করবে।’
বায়ু দূষণ নিয়ে আপনাদের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে এই মেয়র প্রার্থী আরও বলেন, ‘আমরা যে রূপরেখা দিয়েছি। সেখানে আমরা আমাদের ঢাকাকে সবুজ, শ্যামল ঢাকা হিসেবে ঢাকাকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা যে আজকে বায়ু দূষণে আক্রান্ত। এই বায়ু দূষণ যাতে রোধ করা যায়। তাই সুন্দর ঢাকা গড়ার মাধ্যমে বায়ু দূষণ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব।’
এদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তাপস বলেন, ‘নির্বাচনি প্রচারণা যতদিন চলবে এটা হতে থাকবে। এটি রাজনৈতিক কৌশল। আমি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো নিদর্শন দেখছি না। এটি নিছক একটি অভিযোগ করতে হয় তাই তারা করছে।’
এসময় নির্বাচনি প্রচারণায় তাপসের সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে সকাল থেকেই খিলগাঁও এলাকায় জড়ো হতে থাকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাদের বিভিন্ন উন্নয়নের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হতে থাকে খিলগাঁও এলাকা।