‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ব্যালট ইউনিটে ভোটের কাজ সেরে ফেলা হয়। যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছে, সেখানেও এমন অবস্থা। চট্টগ্রামে তার চেয়েও খারাপ হয়েছে। ইভিএমে ভোট ডাকাতি হয় চট্টগ্রামের ভোটে তা প্রমাণিত।’
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাকক্ষে আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমির খসরু বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কী ঘটেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৭০ পোলিং স্টেশনের মধ্যে সবগুলোই দখল করে নিয়েছিল ক্ষমতাসীনরা। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী কেন্দ্রে বাইরের কেউ থাকতে পারবেন না, গাড়ি-মোটরসাইকেল চলবে না। কিন্তু সেখানে চট্টগ্রাম বিভাগের মেয়র, কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবস্থান দৃশ্যমান ছিল। সবাই সরাসরি কেন্দ্র দখল করেছে, মিছিল করেছে। মৃত মানুষের ভোট, প্রবাসীদের ভোট, জেলে থাকাদের ভোটও দিয়েছে। ইভিএমে ভোট ডাকাতি হয় চট্টগ্রামের ভোটে তা প্রমাণিত হয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘চট্টগ্রাম-৮ আসনে ভোটের ব্যালট ইউনিটে ভোটের কাজ তারা সেরে ফেলেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনেও যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছে সেখানেও এমন হয়েছে, চট্টগ্রামে হয়েছে তার চেয়েও খারাপ। তাই কমিশনকে অনুরোধ করেছি চট্টগ্রামের নির্বাচনটি বাতিল করে দিন। ব্যালটের মাধ্যমে পুনর্নির্বাচন দিন। কারণ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার সেখানে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছিল না।
আমির খসরু আরো বলেন, চট্টগ্রামে কেন্দ্র দখল করে ইভিএম-এর পাসওয়ার্ড নেওয়া হয়েছে, এরপর ব্যালট ইউনিটে তারা ভোট দিয়েছে। আমরা বলেছি ভোট বাতিল করে ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা করুন। ইভিএম-এর ভোটে জালিয়াতি হলেও চ্যালেঞ্জের কোনো সুযোগ নেই।
আমির খসরু অভিযোগ করেন, ‘ভারতের চেয়ে ১১ গুণ টাকায় ইভিএম মেশিন কেনা হয়েছে। কিন্তু সেখানে অডিট ট্রেইল ও পেপার ট্রেইল নেই। ভারতের মেশিনে তা আছে। পাঁচ ছয়টি দেশে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে। সেখানে কমিশন বা সরকার নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ নয়। কিন্তু বাংলাদেশের কমিশন এবং সরকার প্রশ্নবিদ্ধ।’ তিনি বলেন, আজ কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা (কমিশন) বলেছেন সবঠিক আছে। কিন্তু আগে ৩০ ডিসেম্বরেও তাঁরা বলেছিলেন সবঠিক আছে, এখনো তাই বলছেন।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ওপর হামলার ঘটনা উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, ‘আমাদের উত্তরের প্রার্থী তাবিথের ওপর হামলা হয়েছে। এ্যানীসহ ১৫ জন হামলায় আহত হয়েছেন। ঢাকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা রাস্তার ওপর অফিস করেছেন, পোস্টার লাগিয়েছে। অথচ আমাদের প্রার্থীকে বৈধ প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনের ওপর সরকার খবরদারি চালাচ্ছে বলে মনে করি। কমিশনের ওপর সব আস্থা হারিয়ে ভোট ব্যবস্থা চলছে।’