তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতা আমীর খসরু চৌধুরী সাহেব মিথ্যা ভাষণ দিয়েছেন। মিথ্যা ভাষন দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। তাদের বলবো এধরণের মিথ্যে ভাষণ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে লাভ হবেনা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীর বিক্রমের স্মরণে নাগরিক শোক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসনে যে উপনির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল দেখতে পেলাম বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন সেখানে নাকি যারা বিদেশ থাকেন প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিরাও ভোট দিয়েছেন।
ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের মহানগর অংশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় পৌণে ৪ লাখ। তারমধ্যে মোসলেম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মাত্র ৩৬ হাজার ভোট পেয়েছেন। যদি ভোট কেন্দ্র দখল হতো এবং তার ভাষ্য অনুযায়ি এই ধরণের ভোটাররা ভোট দিতো তাহলে মোসলেম উদ্দিন আহমেদ ৩৬ হাজার নয় ১ থেকে ২ লাখ ভোট পেতো। এই ধরণের মিথ্যা ভাষন দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। তাদের বলবো এধরণের মিথ্যে ভাষণ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে কোন লাভ হবেনা। জনগণ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে পরিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমেই আওয়ামীলীগের প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন। পরিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বিধায় ভোট প্রদানের হার ২৫ শতাংশের নিচে। অন্যথায় ভোট প্রদানের হার আরো অনেক বেশি হতো।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সামরিক বাহিনীর মানুষকে তাদের প্রশিক্ষণের কারণে আলাদা থাকতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন সেটি থেকে ব্যতিক্রম ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ যেভাবে মানুষকে আপন করে নেন, তার চেয়েও বেশি আপন করে নিতে পারতেন জয়নাল আবেদীন। তিনি অত্যন্ত স্বল্প ও নম্র ভাষি ছিলেন। তিনি কখনো উচ্চস্বরে কথা বলতে আমি দেখিনি। কারো সাথে রাগান্বিত হতে দেখিনি। এধরণের গুণ সব মানুষের মাঝে থাকেনা। সেই কারণে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল স্থাপনের জন্য এবং এই প্রকল্প সরকারের পক্ষ থেকে হাতে নেয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রচন্ড ছুটোছুটি করছিলাম। মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীনের সাথেও কথা বললাম। আমি বলেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলেছি, অপনিও একটু বলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি গত নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করেন তাহলে প্রকল্পটি গতি পাবে। যেকোনভাবে নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পের যদি ভিত্তি প্রস্তুর হয় সেটির ব্যবস্থা করেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে চট্টগ্রাম আসার সুযোগ না পেলেও মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীনের উদ্যোগের কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বে-টার্মিনাল ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করেছিলেন। আজকে বে- টার্মিনালের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এভাবে চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বহু উন্নয়নের কাজ তাঁর মাধ্যমে গতি পেয়েছে।
ড. হাছান বলেন, আজকে তিনি প্রয়াত হয়েছেন, রাজনীতি না করেও সারাজীবন তিনি মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর হাত ধরে বহুজনের জীবনের পরিবর্তন হয়েছে, বহুজন প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি মানুষের জন্য নিভৃত্তে কাজ করেছেন। সেই কারণে আজকে তিনি এত জনপ্রিয়।
প্রয়াতের বড় ভাই ইসমাঈল হোসেন মানিকের সভাপতিত্বে চুনতি মেহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, ওয়াসিকা আয়েশা খানম এমপি, কানিজ ফাতেমা এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। স্বাগত বক্তব্য দেন আবু রেজা নদভী এমপি।