তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘কেউ রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে ফায়দা লুটবে, সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা হতে দেবেন না।’
বুধবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন মহাসচিব শাবান মাহমুদ রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর সারা জীবন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এই কারণেই অভিনন্দন জানাই, দেশবাসীরও অভিনন্দন জানানো উচিত বলে আমি মনে করি কারণ, শেখ হাসিনাকে কোন দলের, কে কোন পথের, কে কোন মতের এটি না দেখে যারা দুষ্কৃতিকারী, মুনাফাখোর, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। দেশকে পরিশুদ্ধ করার ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর। কেউ রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে ফায়দা লুটবে, সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা হতে দেবেন না। সেকারণেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
‘আমরা পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের মধ্যে কিছু সুযোগসন্ধানী ঢুকেছে, যারা রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চায়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল পুরনো ঢাকায় যাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে, এরা অনুপ্রবেশকারী ছাড়া অন্য কিছু নয়, যদিও তাদেরকে বহু আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের এ সমস্ত সুযোগসন্ধানীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’
এসময় বিএনপির বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘দেশ আরো অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারতো, যদি সবকিছুতেই না বলার বাতিকটা বিএনপি-জামায়াত পরিহার করতে পারতো। যদি মিথ্যা বলার যদি কোন পুরস্কার থাকতো, তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেব সেখানে প্রথম পুরস্কার পেতেন। সবকিছুতে না বলা, সুন্দর করে গুছিয়ে, মিথ্যাটাকে সত্য হিসেবে পরিবেশন করা, এই যে কাজ প্রতিনিয়ত তারা করে যাচ্ছেন, তা বিস্ময়কর।’
‘আমি দেখলাম কাগজে যে, বিএনপি বলেছে, দেশের মানুষকে নাকি সরকার জিম্মি করে রেখেছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলার, সেটি এখন ২০০০ ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের মানুষকে বিভিন্ন সময় তারা জিম্মি করেছে, ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে জিম্মি করেছে। শুধু তাই নয়, জিম্মি করে দিনের পর দিন অবরোধ ডেকে মানুষের ওপর আবার পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে। রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা এই বীভৎসতা কোনো দেশে ঘটে নাই। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে, ক্ষমতা যাওয়ার জন্য কিম্বা তাদের নেতা-নেত্রীকে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এই ধরণের সহিংসতা সমসাময়িক পৃথিবীর কোথাও হয় নাই, যেটি বিএনপি করেছে।’
সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর যে বই আজকে শাবান মাহমুদ লিখেছেন, সেজন্য তাকে অভিনন্দন। বঙ্গবন্ধু যেই স্বপ্নের বাংলাদেশ কল্পনা করেছিলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি অনুরোধ জানাবো দেশকে গঠন করতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদ থাকবে, ক্ষমতায় থাকলে সমালোচনা হবে, ভুলও হবে। অবশ্যই আমাদের ভুলের সমালোচনা হবে, বিরোধী দল সংসদে করবে, সংসদের বাইরেও করবে। আমি তাদেরকে অনুরোধ জানাবো দয়া করে অন্ধের মতো কিম্বা মূর্খের মতো সমালোচনা করবেন না। গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে আসুন সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে রাষ্ট্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।’
প্রকাশক ইকবাল হোসেন সানুর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ডিবিসি ২৪ টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক এম এ আজিজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল ইসলাম বিশেষ অতিথির এবং গ্রন্থকার শাবান মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।