
বিএনপির সমালোচনা করে দলটি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বেইলী রোডে অফিসার্স ক্লাবে দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যোগদানের পূর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে ড. হাছান বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) যে দল করেন, সে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশে এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। বিভিন্ন অপরাধ প্রমাণে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম জিয়া নিজে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ অর্থাৎ অপ্রদর্শিত কালো টাকা জরিমানা দিয়ে সাদা করেছেন। দেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে তার প্রয়াত পুত্র কোকোর পাচারকৃত টাকা সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। তারেক ও কোকো’র দু’টো ঘটনাই বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা উদঘাটন করেছে, বাংলাদেশ সরকার নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের নিজের দলই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা হাওয়া ভবন তৈরি করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করছিলেন এবং হাওয়া ভবনের মূল কাজটা ছিল সব ব্যবসায় দশ পার্সেন্ট টোল বসানো, যেটি সমগ্র দেশের মানুষ জানে। সেকারণে তিনি যে কথাগুলো বলেছেন, সেগুলো আসলে তাদের দলের বেলায়, তাদের নেতৃত্বের বেলায়ই প্রযোজ্য।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করছে বিধায় দেশে উন্নতি হয়েছে, অগ্রগতি হয়েছে। যেখানে মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলার, সেটি এখন ২০০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আমরা অর্থনৈতিক, মানবউন্নয়ন, সামাজিক সমস্ত সূচকে আজ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। পাকিস্তান সেজন্য আক্ষেপ করে। তাদের (বিএনপি’র) সময় তারা দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার দেশকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছেন।’
সরকার যদি হস্তক্ষেপ না করতো, তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আরও আগেই হয়ে যেতো- বিএনপির এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আদালতে সরকার কখনোই হস্তক্ষেপ করেনি এবং হস্তক্ষেপ করে না। উচ্চ আদালতে তারা বারংবার জামিন চেয়েছে, পায়নি। তিনি রাজনৈতিক বন্দি নন, তাঁকে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য তারা জামিন চাচ্ছে, সেখানে চিকিৎকদের রিপোর্ট হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আরও যে জটিলতাগুলো তারা উল্লেখ করেছে সেসব সেবা সেখানেই দেয়া সম্ভব। সুতরাং সেই বিবেচনায় আদালত জামিন দেয়নি। এটা আদালতের এখতিয়ার।’
‘আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন বিধায় আমাদের দলের মন্ত্রীদেরকেও আদালতে হাজিরা দিতে হয়, এমনকি আমাদের দলের এমপিরা দুদকের মামলায় জেলেও গেছেন, আমাদের দলের প্রাক্তন দুদফা মন্ত্রী এমন অনেককে জেলে যেতে হয়েছে, সুতরাং আদালত এখানে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে’ বলেও যোগ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান।
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, ডিবিসি২৪ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রখ্যাত চিত্রতারকা রোজিনা, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রমজানুল হক, দৈনিক সময়ের আলো’র প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায় ও চিত্রতারকা অরুণা বিশ্বাস প্রমুখ।