মুজিববর্ষে ভারত সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণের কারণ জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে অন্য কোন দেশের যদি এককভাবে সবচেয়ে বেশি অবদান থাকে, সেটি হচ্ছে ভারত এবং ভারতের জনগণ। মুক্তিযুদ্ধে এবং বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য ভারতের যে অবদান, সেসমস্ত বিবেচনাতেই ভারতের মান্যবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
মঙ্গলবার ( ৩ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশের এক কোটি মানুষ ভারতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। তৎকালীন ভারত সরকার তখন সর্বতোভাবে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য তৎকালীন ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রিরা গান্ধী বিভিন্ন দেশে ছুটে গিয়েছিলেন। এবং আন্তর্জাতিক চাপ ও বিশ্ব জনমতের কারণেই পাকিস্তান বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। এবং ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি যেদিন জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন, সেদিনই প্রকৃতপক্ষে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন মুজিববর্ষকে সামনে রেখে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষ উন্মুখ হয়ে বসে আছে। ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের মান্যবর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিকে বেশ কয়েকমাস আগে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। এবং প্রতিবেশি অনেক রাষ্ট্রকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদি ভারতের অংশগ্রহণ না থাকে, আমি মনেকরি তাহলে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা পূর্ণতা পায় না। সুতরাং এখানে ভারতের অংশগ্রহণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মান্যবর প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিএনপির সমালোচনা করে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য ভারতবিরোধিতার ধারাবাহিকতা রক্ষা, আরেকটি হচ্ছে বাংলাদেশে যে বিশ্বে উদাহরণযোগ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে, তার বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়া। আমি আশা করবো- তারা সেই পথ পরিহার করবেন। মনে রাখতে হবে, যখনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা হয়েছে, তখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তা কঠোর হস্তে দমন করেছে।’
এসময় ‘বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে শিল্প হিসেবে গ্রহণ করার জন্য একটি উকিল নোটিশে’র বিষয়ে মন্তব্য চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি টেলিভিশনের যাত্রাটাই শুরু হয়েছে বাংলাদেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। বাংলাদেশে এর আগে প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল ছিল না। গত এগারো বছরে এ সেক্টরে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। ১০টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ছিল, সেখান থেকে এখন ৩৪টি চ্যানেল চালু রয়েছে, সরকার ৪৫টির লাইসেন্স দিয়েছে।’
‘শুধু তাই নয়,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেবার পর থেকেই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর নানাবিধ সমস্যা সমাধানে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি বলেও যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।