আদালতের রায় অনুযায়ী বিএনপিরও ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দেয়া উচিত : তথ্যমন্ত্রী

আদালতের রায় অনুযায়ী বিএনপি’রও ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এপ্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘জয় বাংলাকে জাতীয় শ্লোগান হিসেবে গ্রহণ করে সবাই যাতে জয় বাংলা শ্লোগান দেয় সেজন্যই মহামান্য হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছে। এই কাক্সিক্ষত রায়কে আমরা স্বাগত জানাই।’

‘জয় বাংলা’ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান, ‘জয় বাংলা’ কোন দলের শ্লোগান নয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম সবক্ষেত্রেই শ্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। সুতরাং এই শ্লোগান দিতে যাদের লজ্জা লাগে হাইকোর্টের রায়ের পর আমি আশা করবো সেই লজ্জা আর থাকবে না। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বিএনপিসহ তাদের সবারই এখন জয় বাংলা শ্লোগান দেয়া উচিত।

‘করোনা’ নিয়ে রাজনীতি নয় : 

‘মুজিববর্ষে বিদেশিরা আসতে চায়নি বলে সরকার দেশে করোনা শনাক্তের ঘোষণা দিয়েছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এহেন মন্তব্য খন্ডন করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বনেতারা মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আসার সম্মতি দিয়েছিলেন এবং নিশ্চিত করেছিলেন। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের মান্যবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিশ্চিত মর্মে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। যেদিন মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটি বেশি জনসমাগমের অনুষ্ঠানগুলো আপাতত পরিহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়েছিল, সেদিনও ভারতের পক্ষ থেকে সফরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। আমাদের সরকার, দল ও সমগ্র দেশবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছিল। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এবং বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হবার পর সেই অনুষ্ঠানগুলো সংকুচিত এবং পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশনা দেন, কোনো অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়নি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গতকাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা প্রকৃতপক্ষে করোনা ভাইরাস নিয়ে মশকরা করার শামিল। অর্থাৎ বিএনপি এই করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করা শুরু করেছে। তাদের উচিত ছিল করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি না করে জনগণের পাশে দাঁড়ানো।’

গত সোমবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের পাশে থাকার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দলের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে জানিয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘কিন্তু বিএনপি সেটি না করে এনিয়ে রাজনীতি করা শুরু করেছে। বাংলাদেশে না হলেও সমগ্র পৃথিবীতে ডিসেম্বর থেকে করোনা ভাইরাস যে মারাত্মক আকারে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, সেদিকে তাদের কোনো দৃষ্টি ছিল না। তারা বরং বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েই ব্যস্ত ছিল। আমি মনে করি জনগণের জন্য যদি তারা রাজনীতি করে, করোনা ভাইরাস নিয়ে দয়া করে রাজনীতি করবেন না বরং এ বৈশ্বিক দুর্যোগকে সমস্ত দলমত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য কাজ করা প্রয়োজন।’

মন্ত্রী এসময় করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্ক পরিহারের বিষয়ে বলেন, ‘কিছু পত্র-পত্রিকা করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, যা না করার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ জানাবো। বাংলাদেশে তেমন আতঙ্ক ছড়ানোর মতো পরিস্থিতিতি তৈরি হয়নি। সরকার এই করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বহু আগে থেকে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে।

‘অন্যদিকে একটি অসাধু মহল মাস্ক, হ্যান্ডওয়াস ও ক্লিনিক মেটেরিয়ালসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, যে বিষয়ে সরকার তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে এবং সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি, আতঙ্ক ছড়ানো বা মুনাফা লোটা কোনভাবেই সমীচীন নয়।