ভারত ও ইউরোপ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রবেশ বন্ধ

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ইউরোপ ও করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে কেউ আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ইউরোপ এবং সেসব এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বেশি সেসব দেশের লোকদের দেশে আসা বন্ধ, একমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া। রোববার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।’

মোট চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এর মধ্যে প্রথম সিদ্ধান্ত ইউরোপের দেশসহ যেসব দেশ করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয়ত যেসব দেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেসব দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ভারতীয় নাগরিকদের ক্ষেত্রেও এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে। কারণ ভারতেও বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয় সিদ্ধান্ত আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশে অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ থাকবে। চতুর্থ সিদ্ধান্ত করোনাভাইরাস উপদ্রুত দেশ থেকে যারাই দেশে আসবেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইনে থাকতে হবে।’

দেশের জনগণের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আরও অনেক দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশও এই পরিস্থিতিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে প্রস্তাব করেছেন, উপমহাদেশের সব রাষ্ট্র যৌথভাবে তা ফেস করবে, আমরাও এ বিষয়ে সম্মত হয়েছি। সার্কের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে এ বিষয়ে একটি ভিডিও কনফারেন্স হবে। রোববার বিকেল ৫টায় (নয়াদিল্লির সময় অনুযায়ী) এটি অনুষ্ঠিত হবে। সাতটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ইউরোপের সবগুলো দেশের ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য ছাড়া। ইন্টারন্যশনাল সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে আমরা যদি জানিয়ে দেই যে এসব দেশ থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, তাহলে তারা তাদেরকে অনবোর্ড করতে দেবে না। ইউরোপের কোনো দেশের সঙ্গেই আমাদের সরাসরি ফ্লাইট নেই, শুধুমাত্র তুরস্ক এবং যুক্তরাজ্য ছাড়া। আমরা যখন বিধিনিষেধ জানাব, তখন এয়ারলাইন্স সিদ্ধান্ত নেবে তারা ফ্লাইট পরিচালনা করবে কিনা।’